বন্দর নগরীতে এ-৭ নামক একটি ঘিয়ের অনুমোদন নিয়ে একাধিক ভেজাল ঘি উৎপাদন ও বিক্রি করে আবুলুল ওরফে আবুল ও তার স্ত্রী’র ভাই মিহির কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এই ভেজাল ঘিয়ের ব্যবসা করে। মিহির বাবু ম্যানেজারও নামী-দামী গাড়ী বিলাসবহুুল জীবনযাপন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন তথ্যমাধ্যমে জানাগেছে চট্রগ্রাম নগরীর ৭নং পশ্চিম ষোল-শহর হামজারবাগ এলাকায় একটি টিন সেডের ঘরে গোপনে ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ফ্যাক্টরি চলে। তখন বাহিরে পাহারাদার বসিয়ে ভেজাল ঘি উৎপাদনের কাজ সম্পন্ন করেন। ফ্যাক্টরি থেকে উক্ত ভেজাল ঘি প্যাকেটজাত ও কার্টুন ভর্তি করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন পাইকারী দোকানে নামী-দামী ব্র্যান্ডের সমমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
নিম্নমানের ভেজাল ঘি তৈরি করতে প্রতি কেজিতে খরচ হয় মাত্র ১৫০/- টাকা। প্রতিকেজি ভেজাল ১৫০০/- টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে যাচ্ছে। এসব অস্বাস্থ্যকর ও মানবদেহের ক্ষতিকারক ভেজাল ঘি উৎপাদনে ব্যবহার করে পাম অয়েল, রাসায়নিক পদার্থ ও স্বাদ বাড়ানো কেমিক্যাল ঘিয়ের ফ্লেভার মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব ভেজাল ঘি।
ভেজাল ঘি উৎপাদনকারী আবুলুল দেড় যুগের বেশী সময় ধরে ভেজাল ঘি তৈরি কর্মাকাণ্ড করে আসলেও প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাসোহারার কারণে ভেজাল কারীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। ফলে বছরের পর বছর ভেজাল ঘিয়ের ব্যবসা করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায়।
ভেজাল ঘি কোম্পানির ম্যানেজার পর্যন্ত নামী-দামী গাড়ী বিলাসবহুল জীবন যাপন করে। ভেজাল ঘি কোম্পানির উৎপাদনকারীরা সু-কৌশলে তাদের ম্যানেজার মার্কেটিং মিহির বাবু উৎপাদনকৃত ভেজাল ঘি খুব সহজেই বাজারজাত করতে টার্গেট করে ক্লাব ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্নাকারী বাবুর্চিদের। প্রায় হাজার খানেক বাবুর্চিদের সাথে ঘি কোম্পানীর ম্যানেজার হিসাবে লোভনীয় কমিশন অফারসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এমনকি অগ্রীম টাকা দিয়ে বাবুুর্চিদের ম্যানেজ করে।
প্রত্যেক বাবুর্চিদের যেন তাদের অনুষ্ঠানে যেমন মেজবান,বিয়ে,লগ্নসহ এসব অনুষ্ঠানের বাজার আইটেমের মেনু পেপার কপিতে উক্ত ভেজাল ঘি ক্রয়ে ১০ কেজি থেকে ৫০ কেজি পর্যন্ত অর্ডার হয়ে থাকে। বাবুর্চিগণ অনুষ্ঠান কৃর্তপক্ষকে জানিয়ে দেয় এ- সেভেন ঘি, এ- সেভেন বাটার, এ-সেভেন গোল্ড ও এ-সেভেন প্রিমিয়াম ঘি দেখে কিনতে হবে এলাকাভিত্তিক বড় বড় পাইকারী দোকানের নামও জানিয়ে দিয়ে রাখে। এভাবে বাবুর্চিদের ম্যানেজ করে এ-সেভেন ভেজাল ঘি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
এসব কৌশলী কর্মকান্ড, কমিশন ভাগ বাটোয়ারা খুবই গোপনীয়তার প্রায় ১২ বছর ধরে নীরবে ঠান্ডা মাথায় পরিচালনা করে। ক্রেতা-ভোক্তার কাছ থেকে ক্যাসিনো ষ্টাইলে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এসব ভেজালকারীদের কুর্মের খবর স্বয়ং সরকারী মনিটরিং কৃর্তপক্ষের কাছেও নেই। অসাধু কয়েকজন কর্মকর্তা, কর্মচারী, স্থানীয় প্রশাসন কতিপয় নামধারী ক্যাশিয়ারদের মাসোহারায় দাপটের সাথে বড় গলায় নিম্নমানের অস্বাস্থ্যকর, মানবদেহের ক্ষতিকারক ভেজাল ঘি উৎপাদন ও বিক্রি করে শত কোটি টাকার মালিক।
আবুলুল ও ভেজালের মূল হোতা মিহির বাবু গংদের খুটির জোর কোথায়? এ বিষয়ে ম্যানেজার মিহির বাবুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাতীয় অর্থনীতিকে বলেন, এ-সেভেন নামক ঘিয়ের লাইসেন্স নিয়ে বৈধভাবে ব্যবসা করি। তবে এ -সেভেন নামের সাথে এ-সেভেন গোল্ড ও এ-সেভেন প্রিমিয়াম ও এ-সেভেন বাটার শব্দ যুক্ত করে আরো কয়েকটি ব্যান্ডের ঘি উৎপাদন ও বাজারজাত করাখানা বিষয়ে জানতে চাইলে মিহির বাবু বলেন আমি ওখানে চাকরি করি মাত্র। প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে কথা বলেন।
প্রতিষ্ঠানের মালিক আবুলুল আমিন জাতীয় অর্থনীতিকে বলেন আমরা বৈধভাবে ব্যবসা করি। তিনি সংবাদ কর্মী বিরুদ্ধে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ এ-সেভেন ঘিয়ের বিরুদ্ধে নিউজ করলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন । প্রতিষ্ঠানের মালিক তাঁর বৈধ সকল কাগজপত্র দেয়ার কথা থাকলেও রির্পোট প্রকাশের পূর্বে পর্যন্ত কোন কাগজপত্র দেননি।
এছাড়া তিনি একজন মন্ত্রী’র বাড়ির লোক বলেও হুমকিদেন । পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকিদেন। ভেজাল, দুর্নীতি, অবৈধ চোরাকারবারী, মাদক এসব ব্যবসা দাপটের সাথে করেই যাচ্ছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী কতৃর্ক দূর্নীতি, মাদক, ভেজালের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণায় ঐসব ব্যবসায়ীরা আড়ালে গেলেও চট্রগ্রামের আবুলুল মিহির বাবু গংদের ভেজাল দূর্নীতির প্রতারণা গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে। ভেজাল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী ও ভোক্তাসাধারন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ।
ধারাবাহিক নিউজ চলবে- পর্ব-১