ঢাকাপোস্টবিডি.কম : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে যারা টিকা নিয়েছেন, তাদেরও যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলতে হবে, সে কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার তিনি সংসদে বলেন, “করোনাকালীন সময়ে সবাই যেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলে। এমনকি যারা টিকা নিয়েছেন তাদেরকেও আমি অনুরোধ করব তারা সুস্থ্য থাকুন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মগুলো যেন একটু মেনে চলেন।”
যারা টিকা নিয়েছেন, তাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে গেলেও মাস্ক পরা বা হাত ধোয়ার মত সুরক্ষা বিধিগুলো না মানলে তাদের মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি থেকেই যায়। সে কারণে বিশেষজ্ঞরা টিকা নেওয়ার পাশাপাশি সবাইকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জোর দিয়ে আসছেন।
সরকারপ্রধান নিজেও সংসদে এবং সংসদের বাইরে বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়ে আসছেন সবাইকে।
মঙ্গলবার সকালে সংসদের মুলতবি বৈঠক শুরু হলে জাতীয় পার্টির (জাপা) সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। রেওয়াজ অনুযায়ী তার জীবনের ওপর আলোচনা করে সংসদ সদস্যরা। পরে সেই শোক প্রস্তাব সংসদে গ্রহণ করা হয়।
শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই পার্লামেন্টে আমরা এতজন সংসদ সদস্য হারালাম। সেটা সত্যি খুব দুঃখজনক। এরকম করে আমরা আর শোক প্রস্তাব আনতে চাই না। আল্লাহ সবাইকে সুস্থ রাখুক। ভালো রাখুক।”
রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে মারা যান মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মাসুদা একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে আইনপ্রণেতা হিসেবে সংসদে বসেন। তিনি জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী বহু গুণ সম্পন্ন একজন মানুষ ছিলেন। তার চলে যাওয়ায় সমাজে একটা বিরাট ক্ষতি হল। দুর্ভাগ্য হল, এই সংসদে আমরা একের পর এক সংসদ সদস্যকে হারাচ্ছি। যখনই সংসদ শুরু করলাম, দুইজনকে হারালাম। আবার আজকে মুলতবি অধিবেশন, তখন ঠিক কালকেই খবর পেলাম। তখন সত্যিই হৃদয় ভারাক্রান্ত হল।”
মাসুদা এম রশিদকে একজন ‘মিষ্টভাষী জ্ঞানী মানুষ’ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “বেঁচে থাকলে সমাজে আরও অনেক অবদান রাখতে পারতেন। এই মৃত্যু সমাজের জন্য যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করল। তার বহুমুখী প্রতিভা নারী সমাজকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস যোগাবে। প্রেরণা দেবে। শক্তি যোগাবে।”
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শোক প্রস্তাব তোলার পর এর ওপর আলোচনা করেন বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের, বিরোধী দলীয় প্রদান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ, কাজী ফিরোজ রশীদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বিএনপির হারুনুর রশীদ, সিমিন হোসেন রিমি, আবদুস সোবহান মিয়া, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, ওয়াশিকা আয়শা খান, নাজমা আক্তার।
আলোচনা শেষে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন রাজশাহীর সংসদ সদস্য এনামুল হক। এর আগে আলোচনা শেষে শোকপ্রস্তাবটি গ্রহণ করে জাতীয় সংসদ।
সংসদের রীতি অনুযায়ী এদিন অন্যান্য কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।