1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ

অসাধু-দুর্নীতিবাজ চক্র ও সুবিধাভোগীদের কারণে দেশ কাক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছেনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৪৩২ বার দেখা হয়েছে

আবু তাহের বাপ্পা :

সরকারি যে কোনো দপ্তরে একটি চাকরি এখন সোনার হরিণ। কাগজে-কলমে কেউ স্বীকার না করলেও বাস্তবে ‘ঘুষ’ ও ‘মামা-চাচা’ ছাড়া সরকারি চাকরি পাওয়া যায়না । তারপরেও জনগণ সরকারি আমলাদের ওপর আস্থা রেখে চলছে।
দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির সঙ্গে সরকারি দপ্তরগুলো সরাসরি কাজ করে। কিন্তু ওই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যখন দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন, বিদেশে অর্থ পাচার করেন তখন দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে নিজেরা লজ্জা পাই ; যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খারাপ উদাহরণ। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও প্রশাসন গড়ে তুলতে হলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারকেই দুর্নীতি বাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার দুর্নীতির বিররুদ্ধে তাঁর কঠোর অবস্থানের কথা বললেও সরকারি কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব প্রদান কেন কার্যকর করা হয় না তা বোধগম্য নয়।
টিআইবি প্রতিবেদনে সরকারি অফিসে দুর্নীতির চিত্র বারবার উঠে এলেও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সামপ্রতি এক অনুষ্ঠানে সরাসরি স্বীকার করেছেন যে, বিদেশে টাকা পাচারের তালিকার শীর্ষে রয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা। দেশের জনগণের কষ্টার্জিত অর্থে যাদের বেতন হয় তারাই বনে গেছে দেশের মালিক।
সরকারি অফিসে দেশের সাধারণ জনগণের প্রবেশাধিকার এখন সংরক্ষিত। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার যেখানে সরকারি উচ্চ পর্যায়ের আমলারা কর্মরত সেখানে তোসাধারণ জনগণের প্রবেশ অঘোষিত ভাবে নিষিদ্ধ। বড় বাবুদের সঙ্গে শুধু রাজনৈতিক দলের বড় মাপের কিছু নেতা ও সুবিধাভোগী লোকজন ছাড়া সাধারণ জনগণের সাক্ষাৎই পাওয়া যায়না। রাষ্ট্র বাসরকার প্রধানের নির্দেশ কী তাহলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শুনবেন না?
সরকারি চাকরিজীবীরা দিন দিন যেন রাষ্ট্রেও মালিক বনে যাচ্ছেন। গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে সব জায়গায় তাদের দাপট। আইন তাদের হাতে। আইন ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাধারণ জনগণকে তোয়াক্কা না কওে এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন না। দেশ স্বাধীন হয়েছিল গোলামির জিঞ্জির থেকে বের হওয়ার জন্য। আজ পরোক্ষভাবে জনগণ সরকারি কর্মচারীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। বিশেষকরে সেবা খাতে জনগণ বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন।
আর সেই সুবাদে দুর্নীতিকরে একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পদেও পাহাড় গড়ে তুলছেন। প্রশাসনের মধ্যে যে ভালোকর্মকর্তা ও কর্মচারী নেই তা বলা যাবেনা। এখানেও ভালো-মন্দ আছে। সামপ্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি জনগণকে বেশি ভোগান্তিতে ফেলেছে। স্বাস্থ্য খাতে চাকরি মানেই সম্পদের পাহাড়। ভূমি, শিক্ষাখাত সহ বিভিন্ন খাতে পদে পদে জনগণ ভোগান্তিতে পড়ছেন।
জনগণ পুলিশের নিকট বিশেষ প্রয়োজননা থাকলে যেতে চায়না। অথচ পুলিশের মূলমন্ত্র ‘সেবাই পুলিশের ধর্ম’। এখনও পুলিশ সদস্যরা শীত-গ্রীষ্ম উপেক্ষা করে জনগণের সেবা প্রদান করছেন কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কারণে পুরো বাহিনী বদনামের ভাগিদার হচ্ছে। আদালতের সঙ্গে পুলিশের সংযোগ ওতপ্রোতভাবে ‘বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে’ এটা আজ বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান।
বাংলাদেশের ভূমি সীমিত কিন্তু জনসংখ্যা অধিক। পারিবারিক কারণে জমি ও সম্পদ নিয়ে ঝামেলা সব সময় একটু বেশিই হয়ে থাকে। এক শ্রেণীর লোক রয়েছে যাদের ভূমি দস্যুও বলা হয়। ভূমিকে ঘিরে রয়েছে বিশাল নেটওয়ার্ক ও ভোগান্তি। ডিজিটালের কারণে যদি এরসমাধা হয় তাহলে দেশের সাধারণ জনগণ কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।
ব্যাংকিং ব্যবস্থায় একটা কথার প্রচলন আছে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ লুটকরে এক শ্রেণীর লুটেরা। তাদের সহযোগিতা করে একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী। জনগণের অর্থ লুটে এরা হয় দেশপ্রেমিক ও শিল্পপতি।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ কওে যাচ্ছে। স¤প্রতি দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আমরা দুর্নীতি দমন করতে নাপারলেও দুর্নীতি দৃশ্যমান অর্থে অনেক কমে এসেছে। দুর্নীতি আজ সামাজিক একটি ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। দুদকের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা দুর্নীতিবাজদের ব্যাপারে দৃশ্যমানশাস্তি অপরিহার্য।
পৃথিবী জুড়ে করোনা মহামারী আকার ধারণ করলেও বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতি সাফল্যজনক। করোনার কারণে এসএমই খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসএমই খাতের ধারাবাহিক অগ্রগতি ধওে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রণোদনা ঘোষণা করলেও ব্যাংকগুলো প্রণোদনা বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়েই কোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা করছে এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এর ফলে দেশের কর্মসংস্থানে নতুন করে সুযোগ সৃষ্টি হবে। এখন শুধু প্রয়োজন সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণ ফিরে পেতে পাওে তাদের মৌলিক অধিকার।
দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু রাষ্ট্রের মেহনতি মানুষের ভাগ্যেও কাক্ষিত উন্নয়ন হচ্ছেনা। চাটুকার, সুবিধাভোগী, মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি সাধারণ জনগণ। তার উপর রয়েছে একশ্রেণীর সুযোগ সন্ধানী রাজনীতিবিদ ও লুটেরাবাহিনী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখনই এদের লাগাম টেনে ধরে আইনের আওতায় আনুন।
দেশের সোনালি দিন সামনে অপেক্ষমাণ।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি