1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩১ অপরাহ্ন

আ.লীগের বিদ্রোহীরা নিরাপত্তাহীনতায়

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২১
  • ১৫৫ বার দেখা হয়েছে

আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে সারা দেশে গ্রামে গ্রামে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় আওয়ামী লীগের মূল প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। আলোচনায় না থাকলেও বিএনপির কিছু প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। জনপ্রিয় ও যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও দলের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচন করছেন অনেক পদধারী নেতা। আবার দলের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করায় রোষানলের শিকার বিদ্রোহীরা। দেশের বেশিরভাগ ইউপিতে নৌকার মনোনয়ন প্রাপ্তরা বিদ্রোহীদের উপর হামলা চালাচ্ছেন এবং তাদের প্রচারণায় বাধা দেয়া, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর চালাচ্ছেন এমন অভিযোগ বিদ্রোহীদের। তাই বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন এমন অভিযোগ করে নির্বাচনের দিন নিরাপত্তা চেয়ে সংশ্লিষ্ট থানা, নির্বাচন কমিশনে আবেদনও করছেন। অনেক ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর অত্যাচার নির্যাতনে টিকতে না পেরে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও বিএনপি নেতারা নৌকার বিজয় ঠেকাতে একত্রিত হয়েছেন। তবে বেশিরভাগ ইউপিতে বিএনপির ভোট টানতে গোপনে সমঝোতা করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।

এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের অনেকেই আওয়ামী লীগের হাই-কমান্ডের নেতা, এমপিদের দিয়ে ডিসি, এসপি ও থানার ওসিদের বলানোর চেষ্টা করছেন যেন, নিরাপত্তা জোরদার করা, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া, পক্ষপাতিত্ব না করেন তারা। এছাড়া সেসব প্রার্থীরা এমপিদের পছন্দের নয় সেখানে এমপিরা যেন প্রভাব বিস্তার না করতে পারেন সেজন্যও চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দারস্ত হচ্ছেন।
জানুয়ারি থেকে প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলার ভোটে এ পর্যন্ত ১৭৮টি সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের ৪১ নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। বিএনপি বিহীন ভোটে আওয়ামী লীগ যেন আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ‘অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী সহিংসতা’র শঙ্কা ততই বাড়ছে।
ভোটের মাঠে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কায় নির্বাচনের সাত দিন আগে থেকে বিজিপি, র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েনের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত আবেদন করেছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের রাজগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ আলম। থানায় জিডি করার পাশাপাশি লিখিত ও মৌখিকভাবে তিনি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে নির্বাচনী পরিবেশ রক্ষা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। তার অভিযোগ- প্রতিপক্ষ লোকজন তাকে ও তার অনুসারীদের নানা ভাবে হুমকি ধামকি ও ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে।
এ বিষয়ে মাসুদ আলম বলেন, তার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীর ক্যাডাররা রামদা, কিরিচসহ নানা দেশীয় বে-আইনী নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নানাভাবে তাকে ও তার অনুসারীদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিজয় ঠেকাতে এবার এক হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দলের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলামের বিজয় ঠেকাতে বিএনপি নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল বারী তালুকদার।
এদিকে সারা দেশে সহিংসতা, হামলা, পাল্টা হামলা চলছেই। মাগুরায় সহিংসতায় চারজন, সিলেটে ১ জন, রাঙামাটিতে ১ জন, ফরিদপুরে ১ জন ও নরসিংদীতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। গত ৪ নভেম্বর নরসিংদীর সদর উপজেলার মেঘনা নদীবেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের নেকজানপুর গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় নির্বাচনে ইউপি মেম্বার প্রার্থী আবু খায়ের গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া আলোকবালী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপুর সমর্থক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহর মধ্যে দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে ২৮ অক্টোবর নরসিংদীতেই রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও নারীসহ আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসুদুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফেরদৌস কামালের সমর্থকদের সহিংসতায় দুই জন নিহত হয়। গত ২৩ অক্টোবর ফরিদপুরের সালথার আওয়ামী যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে মারিজ সিকদার (৩০) নামের একজন নিহত হন। ২৪ অক্টোবর সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক আলাউদ্দিন ওরফে আলাল (৪৫) প্রতিপক্ষের আঘাতে নিহত হন। প্রথম ধাপের ভোটে ২০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের মহেশখালীতে একজন ও কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ইউনিয়নের সিলটকাটায় একজন নিহত হন। আর বরিশালের গৌরনদীতে নিহত হন দুজন।

তবে কোন্দলের কারণে খুনোখুনি বাড়ছে- এটা মানতে নারাজ আওয়ামী লীগের হাই-কমান্ড। তাদের মতে, সব ঘটনা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ নয়। স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের আধিপত্য ধরে রাখার প্রবণতা, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের কারণেও এসব ঘটছে। তবে দলে বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ঘটছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি