1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকা চায় হাইকোর্ট যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের ঢাকা ব্যাংকের ২১ কোটি টাকা আত্মসাত সাইমেক্সের এমডি ও তার স্ত্রী কারাগারে কাতার-বাংলাদেশ ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই ২৩ নাবিকসহ আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে ভিড়ল এমভি আবদুল্লাহ তাপপ্রবাহে বিচারকাজ অনলাইনে করতে প্রধান বিচারপতিকে বারের চিঠি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কাতারের আমির বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন বুধবার, সই হচ্ছে ছয় চুক্তি-সমঝোতা প্রবাসীদের তিন ব্যাংকের একটিতে তারল্যসংকটে, আরেকটি চেয়ারম্যানই সর্বেসর্বা ,অন্যটি এমডি–শূন্য

এ সপ্তাহেই নির্ধারণ করা হবে ভোজ্যতেলের দাম

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ২৯৩ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেশি এবং চাহিদার তুলনায় সয়াবিন ও পাম অয়েলের সরবরাহ কম হওয়ায় দেশের বাজারে গত দুই মাস ধরেই ভোজ্যতেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ৮৮ টাকা লিটার সয়াবিন তেল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়।
এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি এ সপ্তাহের মধ্যেই তেলের যৌক্তিক মূল্য ঘোষণা করবে। দুই একদিনের মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হবে। বৈঠকে ব্যবসায়ীদের দিয়ে তেলের যৌক্তিক মূল্য ঘোষণা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তেল আমদানিতে ভ্যাট এক স্তরে করার জন্য আবারো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ভোজ্যতেল আমদানি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এখন সয়াবিন তেলের দাম বেশি। মিল মালিকরা ১১০০ ডলারের বেশি মূল্যে সয়াবিন আমদানিতে এলসি খুলেছেন। এতে লিটার প্রতি সয়াবিন তেলের খরচ দর প্রায় ১৩২ টাকা পড়বে। এ কারণেই সয়াবিনের দাম বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। ছয় মাস আগে প্রতিটন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ৭০০ ডলারে বিক্রি হলেও বর্তমানে ১১৫৫ থেকে ১১৬০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে দেখা যায়, দাম ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমতে শুরু করেছে। তবে তা স্থিতিশীল নয়। তাই এখনই দাম কমাতে রাজি নয় দেশের ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে বাণিজ্যসচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন বলেন, তেলের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের জন্য কমিটি কাজ প্রায় শেষ করেছে। আমরা দু’এক দিনের মধ্যে বাণিজ্যমন্ত্রীকে নিয়ে একটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক করে তেলের যৌক্তিক মূল্য ঘোষণা করবো। দাম কতো নির্ধারণ করা হলো সেটা এখনই আমরা জানাচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি ব্যবসায়ীদের মুখ থেকেই ঘোষণাটা আসুক।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ডাবল হয়েছে। তাই ব্যবসায়ীদের কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ সয়াবিন তেল পুরোটাই আমদানি নির্ভর। কী করবো এ নিয়ে বেশি কথা বলা যায় না। কথা বললেই বিপদ। আসলে আমরা ঝামেলায় পড়ে গেছি। আন্তর্জাতিক বাজার তো নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম দ্বিগুণ হয়েছে। তবে দেশের বাজারে দাম কিন্তু দ্বিগুণ হয়নি। আমরা ব্যবসায়ীদের বলে কয়ে কম রাখছি। তবে এটা বেশিদিন রাখা যাবে না। কারণ সামনেই রমজান মাস।

জাফর উদ্দিন বলেন, আমরা দুএকদিনের মধ্যেই বসে ব্যবসায়ীদের দিয়েই তেলের যৌক্তিক মূল্য ঘোষণা দেওয়াবো। এই ঘোষণাটা যদি তারা না দেয় তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আন্তর্জাতিক বাজার, স্থানীয় বাজার মূল্য, চাহিদা ও সরবরাহ ইত্যাদির একটা ফরমুলা আছে যেটা অনেক আগের পাস করা। এই ত্রিমাত্রিক ফরমুলা প্রয়োগ করে যেটা হবে সেটাকেই যৌক্তিক মূল্য ধরা হবে।

তেল আমদানিতে ভ্যাট এক স্তরে আনার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হলো জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, এ পর্যন্ত আমরা দুইবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো উত্তর পাইনি। তাই আজ আবার চিঠি লিখবো।

ভোজ্যতেল আমদানিকারক সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে কোনো কমিটি করে লাভ হবে না। বিশ্ববাজারে নভেম্বরে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল টনপ্রতি ৭১০ ডলার, এখন তা ১১শ ডলার ছাড়িয়েছে। একইভাবে ৬০০ ডলারের পাম ওয়েল এখন ৮৫০ ডলার। এভাবে দাম বাড়লে এর প্রভাব তো বাজারে পড়বেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে দাম বেড়েছে সে হারে দেশের বাজারে দাম বাড়েনি।

তিনি বলেন, ভ্যাট বেশি হওয়ায় সাধারণ ভোক্তাদের কাছে চাইলেও কম মূল্যে পণ্যটি সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। তিন পর্যায়ে ভ্যাট-ট্যাক্স মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। আমদানিতে ২০ শতাংশ, উৎপাদনে ১৫ শতাংশ এবং বিক্রয় পর্যায়ে ৫ শতাংশ করে মোট ৪০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। আমরা সেটাকে এক স্থরে ১৫ শতাংশে করার প্রস্তাব দিয়েছি। সরকার যদি এখানে ব্যবস্থা নিতে পারে তাহলে দাম কমানো সম্ভব হবে। কিন্তু এনবিআর বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খুচরা বাজারে এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল কোম্পানি ভেদে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম রাখা হচ্ছে কোম্পানিভেদে ৬২০ থেকে ৬৮০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতি লিটার পাম সুপার ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, পাম অয়েল ১০০ থেকে ১০২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী কারসাজি করে তাদের ইচ্ছেমতো বাজারে সয়াবিনের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এর আগে ভোজ্যতেলের বাজার সহনীয় পর্যায়ে রাখতে কয়েকটি সুপারিশ করেছিল বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন।

ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশগুলো হলো, সরকার উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট মওকুফ করলে এবং সরবরাহ ও খুচরা পর্যায়ে কমিশনের হার লিটারপ্রতি যথাক্রমে ৩ ও ৫ টাকা নির্ধারণ করলে ভোজ্যতেলের দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। দ্বিতীয় সুপারিশে কমিশন বলেছে, ভোজ্যতেলের ওপর যে অগ্রিম কর রয়েছে, সেটি তুলে নিলেও বাজারে ভোজ্যতেলের দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং দাম কমবে। তৃতীয় সুপারিশে ট্যারিফ কমিশন বলেছে, আমদানি মূল্যে শতকরা হারের পরিবর্তে টনপ্রতি নির্দিষ্ট হারে ভ্যাট আরোপ করলেও সুফল পাওয়া যাবে।

কমিশন আরও বলছে, আমদানিকারকদের দুই পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি, অগ্রিম কর প্রত্যাহার এবং সরবরাহ ও খুচরা পর্যায়ে কমিশন যৌক্তিক করলে সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১১০ টাকার মধ্যে রাখা যাবে। এসব সুপারিশের কোনওটাই এখন পর্যন্ত গ্রহণ করেনি সরকার তথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এদিকে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০১৯ সালের মাঝামাঝি প্রতিটন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের আমদানি মূল্য ছিল ৬৫৪ ডলার। এতে ভ্যাট দাঁড়ায় আট হাজার ৭০০ টাকা, প্রতি লিটারে ৮ টাকা ৭০ পয়সা। গত ২০ ডিসেম্বর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি ৭৯৪ ডলারে উঠেছে। এ দরের ওপর নতুন বাজেটের ভ্যাট কাঠামো ও অগ্রিম কর বিবেচনায় নিলে সরকারের রাজস্ব দাঁড়াবে লিটারে ১৪ টাকা ৮৫ পয়সা, ২০১৯ সালের মে মাসের তুলনায় লিটারে প্রায় ৬ টাকা বেশি।

উল্লেখ্য, দেশে বছরে প্রায় ২৮ লাখ টন পরিশোধিত ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এছাড়া দেশে প্রতি বছর আরও প্রায় দুই লাখ টন অভোজ্য তেল আমদানি করা হয়, যা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হয়। ২৮ লাখ টন ভোজ্য তেলের মধ্যে ৯০ শতাংশই আমদানি হয়। চাহিদার মোট ভোজ্য তেলের মধ্যে সয়াবিন তেলের অংশ হচ্ছে ৪০ শতাংশের মতো। পাম তেলের অংশ হচ্ছে ৫২ শতাংশের মতো এবং বাকিটা সরিষা ও অন্যান্য তেল।

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি