1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ

ঝিনাইদহে মুক্তিযোদ্ধা কমিটি নিয়ে সভাপতি- ইউএনওর বিরুদ্ধে কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ

মীর জিল্লুর রহমান
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৩৩৬ বার দেখা হয়েছে

যাদের অদম্য সাহস আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে একটি স্বাধীন ও স্বার্বভৌম দেশ পেয়েছি আমরা। পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা। সরকারের ঘোষণার পরে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় আবেদন করেন বাদ পড়া ৬৩ জন। কিš‘ যাচাই-বাছাই কমিটির অনিয়ম  দুর্নীতির কারণে সেখানেও বাদ পড়েছেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা। তালিকায় নাম উঠেছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক বরাবরে এমন অভিযোগ করেছেন হরিণাকুন্ডু উপজেলার কয়েক জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তারা তাদেরকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে যাছাই-বাছাই কমিটির কাছে দিয়েছেন সকল কাগজপত্র। কিš‘ টাকার বিনিময়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বানানো হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অভিযোগে এমনই বক্তব্য তুলে ধরেছেন তারা। স্বাধীনতার ৫০ বছরে সঠিকভাবে করা হয়নি মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা।

এখনও স্বীকৃতি পাননি অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। ২০১৭ সালে সরকারের ঘোষণার পরে হরিণাকুন্ডু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে কাগজপত্র ও স্বাক্ষীসহ আবেদন করেন ৬৩ জন। এই উপজেলায় ভাতাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ২০৪ জন। ২০১৭ সালে ৭ সদস্যের যাচাই-বাছাই কমিটি ৬৩ জনের তালিকা করে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে পাঠান। এই কমিটির সভাপতি ছিলেন সাবেক এমপি নুরুদ্দিন আহম্মেদ, সদস্য সচিব সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন, সদস্য ছিলেনউপজেলা কমান্ডার মহি উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের প্রতিনিধি তাজ উদ্দিন আহম্মদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি তাহাজ উদ্দিন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের প্রতিনিধি শামসুল আলম এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের প্রতিনিধি মছির উদ্দিন।

তালিকায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে দেশব্যাপী এমন অভিযোগ উঠলে জামুকা আবার নতুন নির্দেশনা দিয়ে চিঠি প্রেরণ করে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে। উপজেলায় ভাতাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার ১০% নতুন করে যাচাই- বাছাইয়ের মাধ্যমে পাঠাতে বলেন। হরিণাকুন্ডুতে ২০৪ জন ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধার

১০% হিসাবে ২১ জনের জায়গায় ৩০ জনের নাম পাঠায় ২০২১ সালের জুন মাসে। ৩ সদস্য বিশিষ্ঠ নতুন এই যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি রেজাউল ইসলাম গ্যান্ধা, সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নাফিস সুলতানা এবং সদস্য জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনিত মহি উদ্দিন। এই কমিটি ৩০ জনের নাম পাঠান জামুকার কাছে। ২০১৮ সাল থেকেই হরিণাকুন্ডুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কমিটি নেই। নতুন কোন নির্বাচনও হয়নি।

আগের কমিটির পাঠানো তালিকায় ৪ নম্বরে নাম রয়েছে মোঃ আক্কাস উদ্দিনের। তিনি উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত আকবর হোসেন বিশ্বাসের ছেলে। জামুকা তালিকায় তার ক্রমিক নং ৮৫। দেশিয় সংগঠক আবেদন করেছেন। তার পক্ষে স্বাক্ষী দিয়েছেন আবু তৈয়ব,ইউসুফ ও আবু

মুছা নামের ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধা।স্বাক্ষীদের বর্ণনায় বলা হয়েছে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসাবে কাজ করেন। ২০২১ সালের জুন মাসে জামুকার কাছে পাঠানো এই তালিকায় নেই আক্কাস উদ্দিনের নাম। আক্কাস উদ্দিন ঝিনাইদহ জেলা
আওয়ামী লীগের চলতি কমিটির ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি মহকুমা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন বলে জানিয়েছেন। তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা সেই বিষয়ে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল
হাই এমপি,জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মকবুল হোসেন,হরিণাকুন্ডু উপজেলার সাবেক কমান্ডার মহি উদ্দিন। তার অস্ত্র জমা দানের সিলিপ সহ যাবতীয় প্রমাণাদিজমা দিয়েই আবেদন করেছেন। কিš‘ তার আবেদন বাতিল করেছেন যাচাই-বাছাই
কমিটি। মহি উদ্দিন নিজেই তাকে প্রত্যয়ন করেছেন।

অথচ একই প্রমাণাদিতে জামুকা তালিকার ১২১ নং ক্রমিকের আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে সুপারিশ করেছেন এই কমিটি। এমন অভিযোগ প্রায় ৩০ জনের স্বীকৃতির দাবিদার মুক্তিযোদ্ধার।মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম উঠলেই ভাতার পাশা-পাশি সন্তানদের চাকরির ক্ষেত্রে কোটার গুরুত্ব। এই সুযোগের জন্য লাখ টাকা দিয়ে হলেও তালিকায় নাম ওঠাবেন এমন ব্যক্তিরা প্রায় কোটি টাকা হাতে তুলে দিয়েছেন এমন অভিযোগ আক্কাস উদ্দিন,আঃ ছাত্তার মুন্সি সহ এই মুক্তিযোদ্ধাদের। টাকা লেনদেনের বিষয়ে অভিযোগ করেছে যাচাই-বাছাই কমিটির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নুরউদ্দিন আহম্মেদও। জামুকার চিঠি অনুযায়ী বাদ দেওয়াদের তালিকা নোটিশ বোর্ডে টাঙানোর কথা থাকলেও টাঙাননি কমিটি। এর ফলে তারা আপিল করার সুযোগ বঞ্চিত হয়েছেন। এই বিষয়ে সাবেক কমান্ডার মহি উদ্দিন বলেন, টাকা লেনদেনের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। রেজাউল ইসলাম গ্যান্ধা ও ইউএনও স্যার জানেন।

জামুকার চিঠি ইউএনও স্যারের কাছে তিনি নিয়ম কানুন ভালো জানেন। আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেয়নি। আমাদের বিরোধী পক্ষ আমাদের নামে অভিযোগ করছে। যাচাই-বাছাই কমিটির বর্তমান সভাপতি রেজাউল ইসলাম গ্যান্ধা বলেন, জামুকার চিঠিতে ২১ জনের নামের তালিকা পাঠানোর কথা ছিল। ইউএনও বললো ৩০ জনের নাম পাঠানো যাবে। টাকা পয়সা লেনদেন ওরা করে থাকতে পারে আমি কারও কাছ থেকে টাকা নেয়নি। আমাদের বিরোধী গ্রুপ আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে। ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, আমরা যাচাই-বাছাই করে যাদের কাগজ পত্রের সত্যতা পেয়েছি তাদের নামের তালিকা পাঠিয়েছি। আমার কাছে কোন টাকা পয়সা লেনদেন হয়নি। কেউ নিয়ে থাকলে তিনি জানেন না। তবে কোন মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ থাকলে আমরা ব্যব¯’া নেব। তবে বাদপড়াদের নামের তালিকা কেন নোটিশ বোর্ডে টাঙানো হয়নি এই বিষয়ে তিনি কোন উত্তর দেননি। তবে মুক্তিযোদ্ধা আঃ ছাত্তার মুন্সি বলেন, এই অফিসের মধ্যে বসেও মহি উদ্দিন ও গ্যান্ধা টাকা লেনদেন করেন। কোন মুক্তিযোদ্ধা মারাগেলে তার পরিবারের লোকজন পক্ষে ভাতার টাকা উত্তোলন করার প্রত্যয়ণ পত্র নিতে আসলে। যাচাই-বাছাই কমিটির সর্বশেষ তালিকায় নাম পাঠাতে কোটি টাকার উপরে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মহি উদ্দিন নিজের হাতে ৭০ লাখের উপরে টাকা নিয়েছেন।

এই টাকা লেনদেনে ইউএনও ড্রাইভারও জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। সাবেক এমপি নুর“দ্দিন আহম্মেদ বলেন,যারা টাকা দিয়েছেন তাদের নামই পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হলেও যারা টাকা দেনিনি তাদের নাম পাঠায় এই কমিটি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি