Warning: Creating default object from empty value in /home/jatioart/public_html/wp-content/themes/NewsFreash/lib/ReduxCore/inc/class.redux_filesystem.php on line 29
পটুয়াখালীতে গোলগাছে সফলতা – দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি
  1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. arthonite@gmail.com : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:০০ অপরাহ্ন

পটুয়াখালীতে গোলগাছে সফলতা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৪১২ বার দেখা হয়েছে

পটুয়াখালী : দক্ষিণাঞ্চলের ফসল গোল গাছ। ডগা থেকে বেরিয়ে আসছে মিষ্টি রস। সেই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু গুড় দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র অর্থকারী ফসল গোল গাছ। এ গাছের নাম গোলগাছ হলেও দেখতে কিছুটা নারিকেল পাতার মতো। নোনাজলে জন্ম, নোনা সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। অথচ এর ডগা থেকে বেরিয়ে আসছে মিষ্টি রস। সেই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়। সুস্বাদু এই গুড়ের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রায় শতাধিক কৃষক এ গাছে রস ও গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। প্রতি বছরই শীতের শুরুতে প্রতিদিন সূর্য ওঠার সাথে সাথে কৃষক বেরিয়ে পড়েন এ গাছের রস সংগ্রহ করতে। এরপর বাড়ির উঠানে বসে শুরু হয় রস দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। সেই গুড় স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে চলছে এসব কৃষকদের জীবন-জীবিকা। কিন্তু জলবায়ুর প্রভাবসহ প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ, চাষাবাদের জমি বৃদ্ধি এবং অসাধু একশ্রেণির বনকর্মীর কারণে ক্রমশই ধ্বংস হতে বসেছে গোল গাছ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের সর্ববৃহৎ বনাঞ্চল সুন্দরবনসহ দক্ষিণ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে গোলগাছ রয়েছে। তবে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া, কুয়াকাটা, রাঙ্গাবালি, গলাচিপা, দশমিনা, বাউফল, বরগুনার আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, ভোলা ও খুলনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাসহ চরাঞ্চলে গোলগাছের বাগান রয়েছে। শীত মৌসুমে গোলবাগানের মালিকরা এর রস দিয়ে গুড় উৎপাদন করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করে থাকেন। এর রস দিয়ে সুস্বাদু পায়েস তৈরি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট গোল গাছের মালিকরা জানান, প্রতিটি গোলগাছের পাতাসহ উচ্চতা হয় ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত। এর ফুল হয় হলুদ এবং লাল। গোলপাতা একটি প্রকৃতিনির্ভর পাম জাতীয় উদ্ভিদ। এই ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদটি নদী-খালের কাদামাটি আর পানিতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয়। তবে গোলগাছ চাষাবাদ অত্যন্ত লাভজনক, সহজসাধ্য এবং ব্যয়ও খুব কম। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োজন হয় না। এতে কোনো পরিচর্যা করতে হয় না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামে প্রতিদিন সকালে কৃষকরা গোল বাগান থেকে সংগৃহীত রস বাড়ির উঠানে নিয়ে আসেন। আর সেই রস গৃহবধূরা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ছেঁকে ঢোঙ্গায় গোলের রস রাখনে। এরপর তাফালে কুটা দিয়ে আগুন ধরিয়ে রস দিয়ে তৈরি করেন গুড়। ওই গ্রামের সুনিতি রানী সকালে বাড়ির উঠানে রস থেকে গুর তৈরির কাজে ব্যস্ত। এসময় তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বাবারে গুড়ে পাক ধরেছে। এখন কথা বলার সময় নেই। একটু বসতে হবে।
অপর এক গৃহবধূ বিথীকা বলেন, প্রতি বছর এই সময় রস জাল দিতে হয়। এ থেকেই তৈরী হয় গুড়। আগে অনেক বেশি গুড় হত। এখন কমে গেছে। নবীপুর গ্রামে গোল গাছ চাষি নির্মল গাইন বলেন, প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে উঠে কলস নিয়ে বাগানে যেতে হয়। এরপর প্রতিটি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হয়। অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে রস সংগ্রহ করা হবে চৈত্র মাস পর্যন্ত।

একই গ্রামের পরিমল হাওলাদার বলেন, বাগানে ৪০০ ছড়া ধরেছে। প্রতিদিন সকালে ৮ এবং বিকালে ২ কলস রস হয়। এই থেকে প্রায় ১০০ কেজি গুড় তৈরি করি।

গোল গাছ চাষি নিঠুর হাওলাদার বলেন, তার বাগান থেকে প্রতিদিন ৪ কলস রস বের হয়। এতে মোট ১৩ কেজি গুড় আসে। এ গুড় কেজি প্রতি ১০০ টাকা দরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। তবে তাদের জীবিকার একটি অংশ বছরের এ সময়ে গোল গাছ থেকে আসে বলে তারা জানিয়েছেন।

বন বিভাগের কলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, এ উপজেলার চাকামইয়া, নীলগঞ্জ ও টিয়াখালীর ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে ৬০ হাজার গোলগাছের বীজ রোপণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। এ বছর আরো ২০ হাজার গোলগাছের বীজ রোপণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এ গাছগুলো উপকূলীয় এলাকার প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি