পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিনেই গতকাল রবিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট ছিল। কিছু এলাকায় গ্যাস থাকলেও স্বল্প চাপের কারণে রান্না বন্ধ ছিল। সারা দিন রোজা রাখার পর পরিবারের সদস্যদের জন্য ইফতার তৈরি করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন গৃহিণীরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরবাসী।
কোনো এলাকায় একদমই গ্যাস ছিল না। কোথাও নিভু নিভু করে জ্বলেছে চুলা। যে পরিমাণ গ্যাস চুলায় জ্বলছে, তা দিয়ে ইফতারি তৈরি করার মতো অবস্থা ছিল না। এ জন্য এসব এলাকার মানুষকে প্রথম ইফতার দোকান থেকে কিনে এনে খেতে হয়েছে। ইফতারসামগ্রীর দোকানে ক্রেতাদের ভিড় অনেক বেড়ে যায়।
দক্ষিণ কুড়িল এলাকার লিচুবাগানের বাসিন্দা সুশান্ত পাল অভিযোগ দিয়ে বলেন, ‘কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত গ্যাস না থাকায় আমাদের বিপাকে পড়তে হয়েছে। যদিও দুপুরের দিকে চুলায় নিভু নিভু ছিল, কিন্তু এই আগুনে কোনো কিছুই করা সম্ভব হয়নি। ’
একই অভিযোগ নতুনবাজারের সকিনা খাতুনের। তিনি বলেন, ‘রমজানের প্রথম দিনে গ্রাহকদের ভোগান্তিতে ফেলানো এটা কোনো মতেই কাম্য নয়। ’
পুরান ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডের বাসিন্দা জামিলা বেগম বলেন, ‘দুপুর পর্যন্ত কোনো রকমে চুলায় রান্না করা গেছে। কিন্তু বিকেলে আলুচপ, বেগুনি ভাজতে গিয়ে দেখি চুলা আর জ্বলছে না। পরে দোকান থেকে কিনে এনে ইফতার করতে হয়। এ নিয়ে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। রোজার দিনে এমন কষ্ট মানা যায় না। ’
এদিকে গতকাল দুপুরে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের স্বল্প চাপের সৃষ্টি হতে পারে। প্রকৌশলীরা মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস কর্তৃপক্ষ।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, ‘হঠাৎ বিবিয়ানায় দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। কিছুই করার ছিল না। আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। বিকেল নাগাদ একটি কূপ মেরামতের কাজ শেষ হয়। আগামীকালের (আজ) মধ্যে আরো তিনটি কূপ উৎপাদনে আসবে বলে আশা করছি। এরপর আরো একটি কূপ চালুর কথা। তবে একটি কূপ মেরামত করতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছে শেভরন। ফলে ৭০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো ঘাটতি থেকে যাবে। ৮ এপ্রিল আমাদের একটি এলএনজির কার্গো দেশে পৌঁছাবে। এরপর ১০ এপ্রিল নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। ’
একই কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহেও ঘাটতির শঙ্কা তৈরি হলো। কারণ দেশের প্রায় অর্ধেক কেন্দ্র এখনো গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে নাজমুল আহসান বলেন, ‘চেষ্টা করছি বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে। ’