1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:৩২ অপরাহ্ন

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সরকারি শালবন দখলের হিড়িক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১
  • ২৭৮ বার দেখা হয়েছে
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সরকারি শালবন দখলের হিড়িক পড়েছে। ক্ষমতাসীন কিছু অসাধু ভূমি দস্যু ও দালালদের হাত ধরে দখল হচ্ছে শালবনের মহা মূল্যবান জমি। বিভিন্ন সময় বন দখলবাজদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেও থামানো যাচ্ছেনা বন দখল। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দখলদারদের সাথে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই দখল হচ্ছে মূল্যবান শালবনের জমি।
তবে জমি উদ্ধারে এবং দখল ঠেকাতে অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাদের উদাসীনতার অভিযোগও রয়েছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায়, কালিয়াকৈর রেঞ্জের আওতাধীন চন্দ্রা বন বিট, মৌচাক বিট,রঘুনাথপুর বিট, বোয়ালী বিটের বিভিন্ন স্থানে সরকারি শালবনের জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন, ঘরবাড়ী, দোকানপাট। নিয়ম নীতি না মেনে বনের সীমানা ঘেষেও নির্মাণ করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা। বনের আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত বনের পাশে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে কোন প্রকার স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে বন বিভাগ থেকে অনুমতি ও জমির সীমানা নির্ধারণের নিয়ম থাকলেও তার কোনটি মানা হচ্ছে না। শুধু স্থানীয় লোকজন নয় প্রতিনিয়তই বিভিন্ন মিল কারখানা ও ঝুট গুদামের দখলেও চলে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ বনের জমি। রাতের আধারে সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে ওই সব মিল কারখানার যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করার অভিযোগও রয়েছে। সম্প্রতি উপজেলার চন্দ্রা বন বিটের আওতাধীন কালামপুর এলাকার আলোচিত পার্ক সোহাগ পল্লীর মালিক বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধেও বনের জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কালামপুর এলাকায় তার ব্যাক্তিগত সম্পত্তির পাশাপাশি দুই পাশের কিছু বনের জমি দখল ও বনের গাছ কেটে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তবে মামলা দায়ের করেও দখল ঠেকাতে পারেননি বন বিভাগ। বনের গাছ কেটে তৈরি করা রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হলেও পুনরায় আবার দখলে চলে গেছে জমিগুলো। এছাড়াও একই বিটের আওতাধীন পল্লীবিদ্যুৎ সরকারবাড়ী এলাকা, বোর্ডমিল এলাকা, মাটিকাটা রেল লাইন এলাকা, বক্তারপুর এলাকায় এক যোগে বনের জমি জবরদখল করে বেশ কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। অনেক স্থানে আবার সীমানা নির্ধারণ ছাড়াই নির্মাণ হচ্ছে বড় বড় স্থাপনা। স্থানীয় কিছু অসাধু বন দালালদের সহযোগিতায় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে আঁতাত করে জমি দখল নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছে স্থানীয় ক্ষমতাসীনরা। ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা, পল্লিবিদ্যুৎ এলাকায় সড়কের পাশের কোটি কোটি টাকা মূল্যের জমি ঝুট ব্যবসায়ীদের জবর দখলে রয়েছে। শালবন পুড়িয়ে জমি দখল করে নিচ্ছেন ক্ষমতাসীন ঝুট ব্যবসায়ীরা। চাঞ্চল্যকর এসব ঘটনার বেশির ভাগই কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের আশেপাশেই। এদিকে গত এক মাসে একই রেঞ্জের মৌচাক বিট অফিসের আওতাধীন আলিফ কম্পোজিট,  উত্তর মৌচাক, ভান্নারা, রাখালিয়াচালা কৌচাকুড়িসহ আরও কয়েকটি স্থানে শালবনের জমি জবরদখল করে দশটিরও বেশি স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বন দখল নিয়ে অনেক সময় দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষেরও সৃষ্টি হয়। চলতি মাসের গত শনিবার উপজেলার পূর্ব চান্দরা এলাকায় বনের জমিতে গড়ে উঠা অর্ধশতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের দখল নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে ধাওয়া পাল্টা  ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় মানিক হোসেন নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি বনের জমিতে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা দোকানপাট দখল ও চাঁদা আদায় নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

মৌচাক বিট কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান মানিক মুঠো ফোনে  জানান, যারা বনের জমি জবর দখলের সাথে যুক্ত তাদের সাথে আমরা অল্প সংখ্যক কর্মকর্তা কর্মচারীরা পেরে উঠি না। তাই দখলদারদের নামের তালিকা করে আইনি ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। এমনকি বনের জমিতে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

এসব বিষয়ে কালিয়াকৈর রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম দোলন  জানান, সরকারি সংরক্ষিত বন বিভাগের জমি দখলের সাথে যারা যুক্ত আছেন  ঐ সব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডি.এফ.ও) মোহাম্মদ ইউসুফ  জানান, এ বিষয়ে সঠিক তদন্ত করে দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি