অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সবাই ভ্যাট দিতে চাইলেও আইনি প্রক্রিয়া জটিল থাকায় অনেকেই ভ্যাট দিতে পারছে না। এ জন্য আইনকে সহজ করতে হবে। শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে আইডিবি ভবনে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ ২০২১ উপলক্ষে মতবিনিময় ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যারা ভ্যাট আদায় করছেন তাদের বলবো- জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে ভ্যাট আদায় করবেন।
রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের একটা বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে, যারা শুধু ট্যাক্স দেয় তাদের বেশি করে প্রেশার দেবেন পাশাপাশি যারা ভ্যাট-ট্যাক্স দিচ্ছে না তাদের ভ্যাটের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ভ্যাটে প্রয়োজনীয় ফরমগুলোকে সিম্পলিফাই করে ক্রেতার কাছে নিয়ে গেলে তারা নিজেরাই এগিয়ে আসবে। অনেকেই ভ্যাট, ট্যাক্স দিতে ভয় পায়, তাদের বোঝানো হয় একবার দিলে আর বের হতে পারবে না। এটা ঠিক নয়।
অনুষ্ঠানে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জাতীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী ৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা তুলে দেন অর্থমন্ত্রী।
যাদের পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে; উৎপাদন খাত থেকে রয়েছে এরিস্টোফার্মা লিমিটেড, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড ও মেসার্স মায়া বিড়ি ফ্যাক্টরি।
ব্যবসা শ্রেণিতে আছে এস এম মোটরস, এমকো বাজাজ ইন্টারন্যাশনাল ও ইউনিয়ন মোটরস লিমিটেড।
আর সেবা ক্যাটাগরিতে ৩ সেরা ভ্যাটদাতা হলো ইডটকো বাংলাদেশ কোং লিমিটেড, গ্রে অ্যাডভারটাইজিং লিমিটেড ও রবার্ট বস (বাংলাদেশ) লিমিটেড।
অর্থমন্ত্রী সেরা ভ্যাটদাতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের যে অর্জন, যে সম্পদ সেখানে কিন্তু আপনার প্রতিবেশীর অধিকার আছে। আপনাদের আয়ের ওপর তাদের হক আছে। আপনাদের ভ্যাট, ট্যাক্সের টাকা দিয়েই পিছিয়ে পড়া মানুষদের অর্থনীতির মূল স্রোত ধারায় আনার চেষ্টা করছি। যে রেভিনিউ আপনারা দিচ্ছেন তা দিয়ে আমরা অবকাঠামো করছি, পিছিয়ে পড়া মানুষদের সামনে আনার কাজ করি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন বলেন, যারা নিয়মিতভাবে মূসক প্রদান করছে তাদের হয়রানি না করে উৎসাহিত করা জরুরি। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে খাতাপত্র জব্দ করা, হয়রানি করা, দাবিনামা প্রেরণ, কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান এবং আতংক পরিস্থিতির যে অভিযোগ পাওয়া যায় তা স্থিতিশীল ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সহায়ক নয় । তবে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে রাজস্ব ফাঁকি দেয় আমরা তাদের পক্ষে নই।
তিনি আরও বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জেলা চেম্বার ও খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনসমূহের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করা প্রয়োজন। মূসকের জন্য ঢাকায় এলটিইউ বর্তমানে ১টির স্থলে ২টি এবং চট্টগ্রামে একটি এলটিইউ স্থাপন করা হলে রাজস্ব আহরণে সহায়ক হবে বলে।
সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম গণমাধ্যমকে বলেন, কর ছাড় সব সময় নেতিবাচক নয়। এটা কর্মসংস্থান বাড়ায়। আমাদের কর ছাড় রাখতে হবে, কর ছাড় কমাতে হবে এবং সিলেক্টিভ হতে হবে। রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতা বাড়ানোর কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে হবে।