ঈশিতা দত্ত, তার প্রথম পরিচয় তিনি একজন বাঙালি অভিনেত্রী। দ্বিতীয় পরিচয় তিনি বলিউডের আলোচিত ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী পশ্চিমবঙ্গের তনুশ্রী দত্তের বোন। তনুশ্রীর বোন হিসেবে তাকে অনেকেই চিনলেও ‘এক ঘর বানাউঙ্গা’, ‘বেপানাহ প্যায়ার’-এর মতো বেশ কয়েকটি হিন্দি ধারাবাহিকে নজর কেড়েছেন ঈশিতা।

সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে ‘দৃশ্যম’-খ্যাতি। এই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে অজয় দেবগানের মেয়ে অঞ্জু সালগাঁওকারের চরিত্রে তাকে দেখা গিয়েছে। ২০১৫ সালে ‘দৃশ্যম’ ছবি দিয়েই প্রথম বড় পর্দায় পা রাখেন ঈশিতা। তবু আলাদা করে পরিচিতি পাননি তেমন।

ঈশিতা সাহসী দৃশ্যে অস্বস্তি বোধ করেন। তাই সুযোগ পেলেও ওটিটিতে কাজ করেননি টেলিভিশনের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। তবে ভাগ্য অন্যদিকেও মোড় নিতে পারত, বলে আক্ষেপ অভিনেত্রীর।

৭ বছর পর, ২০২২ সালের নভেম্বরে ‘দৃশ্যম ২’ মুক্তি পেল। চূড়ান্ত সফল সে ছবি দর্শকের মন ছুঁয়ে গেছে। কিন্তু বাঙালি অভিনেত্রীকে নিয়ে এবারও তেমন চর্চা হয়নি। ‘দৃশ্যম ২’-তেও ছিলেন ঈশিতা। ছবির সাফল্যে তার ব্যক্তিগত আক্ষেপ চাপা পড়ে যেতে দেখা যায়।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বললেন, “যখন জানতে পারি ‘দৃশ্যম ২’ নির্মাণ করা হবে, তখন থেকেই চিন্তা হচ্ছিল। সাত বছর পর ছবিটিকে ঘিরে মানুষের কেমন প্রতিক্রিয়া হবে, এ নিয়ে একটু উদ্বিগ্ন ছিলাম। এক বছর ধরে আমরা এই ছবিটি নিয়ে কাজ করে চলেছি। অবশেষে ছবিটি পর্দায় এসেছে। ‘দৃশ্যম ২’ ঘিরে মানুষের একই রকম উন্মাদনা দেখে খুবই ভাল লাগছে। ‘দৃশ্যম’-এর মতো বড় প্রকল্পের অংশ হতে পারাই আমার আনন্দ।”

ছবির চরিত্রে যেমন পরিবার রক্ষায় তৎপর হতে দেখা যায় ঈশিতাকে, জানালেন বাস্তবেও তিনি কাছের মানুষের জন্য একই রকম ভাবেন। তার কথায়, “আমার জন্য আমার পরিবার আর বন্ধুরাই সব। ক্যারিয়ারের গুরুত্ব আমার কাছে অনেক, কিন্তু তার জন্য পরিবারকে বঞ্চিত করব না। কারণ, কাজ আমার জীবনের অংশ মাত্র, আমার জীবন নয়।”

যদিও ‘দৃশ্যম’-ও তার ভাগ্যের চাকা সেভাবে ঘোরাতে পারেনি। অভিনেত্রী জানান, অনেকেই তাকে ‘দৃশ্যম’-এ কাজ করতে বারণ করেছিলেন। নায়িকা তো নন! কিন্তু ঈশিতার কথায়, “অজয়, টাবুর মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। আর চরিত্রটাও ছিল অন্য রকম। কিন্তু ‘দৃশ্যম’-এর পর থেকে আমার কাছে একই ধরনের চরিত্রের প্রস্তাব বেশি এসেছিল। ওটিটি থেকেও বেশ কিছু প্রস্তাব এসেছিল। করিনি। কারণ, চিত্রনাট্যে সাহসী দৃশ্য ছিল। আমি সেসবে মোটেও স্বাচ্ছন্দ নই।”

সুযোগ হাতছাড়া হওয়া নিয়ে তার আক্ষেপ নেই। ঈশিতার দাবি, কিছু বিষয় ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। তাঁর কথায়, “হয়তো কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি, না হলে আমার ক্যারিয়ার আজ অন্য আকার নিত। শেষ পর্যন্ত মনে হয় যে ভাগ্যে যা লেখা থাকে, তা-ই হয়।” তবে ঈশিতা জানান, যে কাজই করুন তাতে নিজের সেরাটুকু দেওয়ার চেষ্টা করেন। যা পেয়েছেন তাতেই সুখী তিনি।