1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০২:৪৯ অপরাহ্ন

ভোটের ফল দেখে ধারণা হচ্ছে নির্বাচন নির্বাসনে যেতে চায় : ইসি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ১৯৭ বার দেখা হয়েছে

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থাপনা এখন গভীর খাদের কিনারে। পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে আমার ধারণা হচ্ছে, নির্বাচন নির্বাসনে যেতে চায়। আচরণবিধি লঙ্ঘন ও হানাহানি বর্তমানে নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে গেছে।’ নির্বাচন এখন আগেই নির্ধারিত কি না, সে প্রশ্নও করেন তিনি।
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে মাহবুব তালুকদার এসব কথা বলেন। পরিস্থিতি উন্নয়নে রাজনৈতিক দলগুলো এবং সংশ্লিষ্ট সবার সমঝোতা প্রয়োজন বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
দেশের ৪২ জন ‘বিশিষ্ট নাগরিক’ আপনাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন; এ বিষয়ে আপনার অবস্থান কী—এ প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমাদের কাছে পদত্যাগ দাবি করেছেন কি না জানি না। দাবি যদি করে থাকেন, আর আমি ব্যক্তিগতভাবে পদত্যাগ করলে যদি লাভ হয়, দেশের যদি কোনো উপকার হয়, তাহলে আমি যেকোনো মুহূর্তে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।’

তিনি বলেন, ‘আমরা একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনার নির্বাচিত হয়েছি। এখন যদি আমাদের বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হয়, সে ক্ষেত্রে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আর একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হওয়ার পরে আমি পদত্যাগ করে ফেললাম, তা কোনো বিষয় হয় না। আমি ব্যক্তিগতভাবে দু-তিনবার পদত্যাগের অনুরোধ পেয়েছি। এখন কতবার পদত্যাগ করব, সেটাও একটা প্রশ্ন।’ নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের সুপারিশ করবেন কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ইসি মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘এই সুপারিশ আমাদের ওপর নির্ভর করে না। নির্বাচন কমিশন যাঁরা নিয়োগ করেন বা সংশ্লিষ্ট থাকেন, তাঁরা এ সুপারিশ করতে পারেন।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের আজ চার বছর পূর্ণ হলো। পেছনের দিকে তাকিয়ে মনে হয় আমাদের আত্মবিশ্লেষণ প্রয়োজন। প্রায় সব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে আমরা তৃপ্তিবোধ করি। কিন্তু নির্বাচন বিষয়ে আমাদের সব দাবি জনগণের উপলব্ধির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। কেবল রাজনৈতিক দল নয়, নীরব জনগোষ্ঠীর অশ্রুত ভাষা শ্রবণের প্রচেষ্টা থাকা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নির্বাচন এককেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। এককেন্দ্রিক নির্বাচন বহুদলীয় গণতন্ত্রের উপাদান হতে পারে না। যেহেতু নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না, সেহেতু নির্বাচনের প্রতিটি আইন-কানুন ও আচরণবিধি কঠোরভাবে পালনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে পরিপালন ও সংরক্ষণ করতে হয়। কিন্তু নির্বাচনপ্রক্রিয়া যথাযোগ্য সংস্কার না করার কারণে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা এখন গভীর খাদের কিনারে। এই সংস্কার নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলো এবং সংশ্লিষ্ট সবার সমঝোতা প্রয়োজন।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে আমার ধারণা হচ্ছে, নির্বাচন নির্বাসনে যেতে চায়। নির্বাচন অর্থ অনেকের মধ্য থেকে ভোটের মাধ্যমে বাছাই। কিন্তু সে অবস্থা আজকাল পরিলক্ষিত হয় না। প্রশ্ন জাগে, নির্বাচন কি এখন পূর্বে নির্ধারিত? নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য না হলে, কোনো বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র আপন মহিমায় বিকশিত হতে পারে না।’
আগামী মে মাস থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে, ব্যাপক পরিসরে, কয়েক ধাপে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনেও সহিংসতার আশঙ্কা করি। আচরণবিধি লঙ্ঘন ও হানাহানি বর্তমানে নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে গেছে। কোনো অনভিপ্রেত ঘটনাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কারণ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মিলে একটি অবিচ্ছিন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তাই প্রাণহানির অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষার পথ অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের উদ্যোগ কেন কার্যকর হচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক।’ সব শেষে মাহবুব তালুকদার বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কার্যকালের শেষ বর্ষের প্রারম্ভে দাঁড়িয়ে একজন আশাবাদী মানুষ হিসেবে ‘যার শেষ ভালো তার সব ভালো’ এই প্রবাদবাক্যটিকে কি আশ্রয় করতে পারি?”

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি