1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

এ যেন ফুলের সাম্রাজ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৬৪১ বার দেখা হয়েছে

এ যেন ফুলের সাম্রাজ্য। চোখে না দেখলেই বিশ্বাস করা যাবে না। শুনলে শুধু মনে হবে স্বপ্ন বা কল্প কাহিনী। চারদিকে লাল, নীল, গোলাপী বেগুনি হলুদ, সাদা ও লাল হরেক রকমের বাহারি ফুল। গ্রামের পর গ্রাম ধূ ধূ প্রান্তর যতদূর চোখ যায় শুধু ফুল আর ফুল। এ রকম মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যা দেখতে পাওয়া যায় নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাবদী গ্রামে গেলে। স্থানীয়সহ নারায়ণগঞ্জ জেলার মানুষ এই গ্রামকে এখন নানা নামে ডাকে। যেমন কেউ বলে ফুলের গ্রাম, কেউ বলে ফুলের রাজ্য বা আর কেউ বা বলে ফুল সাম্রাজ্য। আর একটু শিক্ষিত মানুষ এখন এই গ্রামকে বলে “ফ্লাওয়ার ওয়ার্ল্ড”। মূলত এই গ্রামের মানুষ একটি নির্দিষ্ট মৌসুমে ফুলের চাষ করে থাকেন। এতে এই গ্রাম থেকে বছরে ৫০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির প্রত্যাশা করছেন চাষীরা। এছাড়া প্রতিদিন ঢাকা ও আশপাশ এলাকা থেকে ভ্রমণপিপাসু মানুষ ভিড় জমাচ্ছে ওই গ্রামে।

সরেজিমন গিয়ে দেখা যায়, সাবদি গ্রাম ছাড়াও পাশের গ্রাম দীঘলদী, মাধবপাশা, আরজাদি, ফেলারদী, আখতলা, মুখ কলদী, শেলসারদী ও বন্দর ইউনিয়নের চৌধুরীবাড়ি, চিনারদী, মোল্লাবাড়ি, কলাবাগ, নবীগঞ্জ, তিনগাঁও এলাকায় জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ করেছেন চাষিরা। ওই গ্রামের জমিগুলোতে বিদেশি জারবেরা, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জিপসি, চেরি, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, হলুদ গাঁদা, গ্লাডিওলাস, চায়না গাঁদা, কাঠমালতী, কামিনী, বেলি, জবা, গন্ধরাজসহ নানান প্রজাতির ফুল ফুটেছে। কলাগাছিয়া ইউনিয়নের এসব গ্রামের প্রায় ১৫-১৬ হাজার নারী-পুরুষ এ ফুল চাষে এখন স্বাবলম্বী। প্রায় দেড়শ’ হেক্টর আবাদি জমিতে ২৪-২৫ ধরনের ফুল চাষ হচ্ছে। বসন্ত, ফাগুন, ভালোবাসা দিবস, ২১শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসকে কেন্দ্র করে ৪-৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করে থাকেন। এছাড়া। এছাড়া ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় জমান সাবদি গ্রামে।

সাবদির ফুল বাগানের মালিক মো: আনিস মোল্লা জানান, বাগানে চাষ করা হচ্ছে- গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, বাগানবিলাস, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, কসমস, দোলনচাঁপা, নয়নতারা, মোরগঝুঁটি, কলাবতী, বেলি, জিপসি, চেরি, কাঠমালতি, আলমন্ডা, জবা, রঙ্গন, টগর, কাঠগোলাপ, রক্তজবা ও ক্যালেন্ডুলা।
তিনি আরো বলেন, ফলন ভালো হলে লাভ বেশি হয়। তবে ফুল চাষের জন্য মানসম্পন্ন বীজ, চারা ও টিস্যু কালচারের জন্য গবেষণাগার নেই। স্বল্প সুদে ঋণের সুবিধা পাওয়া যায় না। উৎপাদিত ফুল সংরক্ষণে কোনো হিমাগার এবং বাজারজাত করারও ভালো ব্যবস্থা নেই। এসব সমস্যার সমাধান হলে এ গ্রামে ফুলের চাষ আরো বাড়বে, আগ্রহী হবে কৃষকরা। এতে এক সময় এখান থেকে অর্ধ শত কোটি টাকা ফুল বিক্রি করা সম্ভব।
সেলশারদি গ্রামের ফুল চাষিরা বলেন, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ভালোবাসা দিবস, পহেলা বৈশাখ, ২১শে ফেব্রুয়ারিসহ নানা দিবস ছাড়াও বিয়ে, জন্মদিন পূজা-পার্বণে ফুলের বেশ চাহিদা থাকে। এ সময় দামও ভালো পাওয়া যায়।
ওই গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা মোজাফ্ফর মিয়া জানান, ১৯৮০ সালের দিকে কাঠমালতী ও গাঁদা ফুল দিয়ে বন্দর উপজেলার সাবদীতে ফুলের চাষ শুরু হয়। ধীরে ধীরে কৃষিজমিতে এই ফুল চাষ সম্প্রসারিত হতে থাকে। এখানকার প্রতিটি বাড়ির সীমানা, সড়কের দুপাশে কাঠমালতীসহ বিভিন্ন ফুলের গাছ লাগানো রয়েছে। ফুল চাষ করে স্থানীয় লোকজন এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী।

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি