সাধারণত রক্তের গ্রুপ না মিললে ফুসফুস প্রতিস্থাপিত করা হয় না। ফলে অনেক সময় রক্তের গ্রুপ মেলাতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়। যার ফলে রোগীর অবস্থা অনেক সময় খারাপ হয়ে যায়।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা জানিয়েছে,যার ফুসফুস নেয়া হবে তার রক্ত কোন গ্রুপের, তা আর দেখে নিতে হবে না শল্য চিকিৎসকদের। কারণ প্রতিস্থাপনের আগে বদলে নেয়া হচ্ছে দাতার ফুসফুসের রক্তের গ্রুপ।

ফলে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের কাজটা এ বার অনেক সহজ হয়ে যাবে। ফুসফুস প্রতিস্থাপনের জন্য উপযুক্ত ফুসফুসের আর অভাব হবে না, রোগীকে আর দীর্ঘ দিন অপেক্ষাও করতে হবে না।

শুক্রবার সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘সায়েন্স ট্রান্সলেশনাল মেডিসিন’-এ।

এই গবেষণা পত্রিকা জানিয়েছে, আর রক্তের গ্রুপ মিলিয়ে এক জনের ফুসফুস অন্য জনের দেহে বসাতে হবে না। যে কোনও গ্রুপের রক্তের দাতারই ফুসফুস নেয়া যাবে প্রতিস্থাপনের জন্য। শুধু প্রতিস্থাপনের প্রাক মূহুর্তে দাতার রক্তের গ্রুপটিকে গ্রহীতার রক্তের গ্রুপে বদলে নিতে হবে।

গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, প্রতিস্থাপনের আগে দাতার রক্তের গ্রুপ গ্রহীতার রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে ব্যবহার করা হবে একজোড়া উৎসেচক। একটির নাম— ‘এফপিগ্যালন্যাক ডিঅ্যাসিটাইলেজ’, অন্যটি ‘এফপিগ্যালাক্টোস্যামিনিডেজ’।

দাতার ফুসফুসটির রক্তের গ্রুপকে গ্রহীতার শরীরে থাকা যে অ্যান্টিজেন চিনতে পারে বলে অন্য গ্রুপের রক্ত দেয়া হলে মানবশরীর তা প্রত্যাখ্যান করে সেই অ্যান্টিজেনটিকে সরিয়ে দেয় এই দু’টি উৎসেচক।

গবেষকরা আট রকমের রক্তের গ্রুপের ফুসফুস নিয়ে গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন, ওই দুটি উৎসেচক যৌথভাবে চার ঘণ্টার মধ্যেই অ্যান্টিজেনটিকে নিখুঁতভাবে সরিয়ে দিতে পারে। তার ফলে, ৯৭ শতাংশ ক্ষেত্রেই যেকোনো গ্রুপের রক্তের ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে।

গবেষকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকায় এই মূহুর্তে প্রতিস্থাপনের জন্য উপযুক্ত, এক গ্রুপের ফুসফুস পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন অন্তত এক লাখ রোগী। তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফুসফুস প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন। যত রোগী প্রতিস্থাপনের জন্য ফুসফুসের অপেক্ষায় ছিলেন ২০১৭ সালে তাদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সঠিক গ্রুপের রক্তের ফুসফুস পেয়েছিলেন।