1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১১:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এম.জি. কিবরিয়া চৌধুরীর ভাই প্রকৌশলী গোলাম সরওয়ার মারা গেছেন বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়: প্রধানমন্ত্রী বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, আঘাত হানতে পারে চলতি মাসেই  আরসার আস্তানায় র‍্যাবের অভিযান, অস্ত্র-গ্রেনেডসহ গ্রেপ্তার ২ ইসরায়েলের সেনা ঘাঁটিতে ভয়াবহ আগুন স্বজনদের কাছে ফিরলেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক ৫ ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকস নিষিদ্ধ চেয়ে মামলা, মালিকদের তলব নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদার বিরুদ্ধে সাবেক বাপেক্স এমডির সাক্ষ্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসতে পারবেন না ডোনাল্ড লু কুতুবদিয়ায় নোঙর করলো এমভি আবদুল্লাহ

সন্ত্রাসীদের বাধায় ময়মনসিংহে সরকারী জলমহালের দখল নিতে পারছে না লীজপ্রাপ্ত প্রকৃত মৎস্যজীবিরা

ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট : শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১
  • ৫৬৯ বার দেখা হয়েছে

ময়মনসিংহে সরকারী জলমহাল সন্ত্রাসীদের দ্বারা জোরপূর্বক দখল ও জলমহালের আশপাশে সরকারী ভূমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মান প্রচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ন্যায্য ইজারাদাররা জলমহালের দখল নিতে গিলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। ময়মনসিংহ জেলার এসিল্যান্ড কর্তৃক অবৈধ সন্ত্রাসী দখলদারদের কাছ থেকে জলমহাল উদ্ধার করে লীজকৃত ইজারাদারের পক্ষে সাইনবোর্ড স্থাপন করতে গেলে, সন্ত্রাসীরা তাদের উপরও হামলা করেছে বলে জানা যায়। এই বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যাপ্রচেষ্টার মামলা হয়েছে। এছাড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ১৪৪ ধারায় নালিশী আর্জিও রুজু হয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা সদরের কুষ্টিয়া ইউনিয়নের দড়ি কুষ্টিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসী দখলদার বাহিনীর পক্ষে সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী এ.কে.এম খালিদ বাবুর গানম্যান এসআই কামরুল ইসলামের পিতা মকবুল হোসনের (মকবুল পুলিশ) সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। মকবুল পুলিশ তার পুত্রের ও সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে দখলদার সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে এইসব অপকর্ম করে যাচ্ছেন বলে ভূক্তিভোগীরা অভিযোগ করেছেন। এদিকে জলমহালটি উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের বিষয়ে প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ভূমিদস্যূ ও সন্ত্রাসীদের পেছনে ২ নং কুষ্টিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসনূল ইসলাম হাসানও মদদ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজাকার কুুদ্দুস ক্বারীর নিকট আত্মীয়রা ও বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্তরা এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে জড়িত বলেও ভুৃক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলা সদরের কুষ্টিয়া ইউনিয়নের দড়ি কুষ্টিয়া গ্রামে সরকারী খাস জমির কিছু অংশ দীর্ঘদিন যাবত খালি বা পতিত অবস্থায় ছিলো। এই সুযোগে ওই এলাকার একদল সন্ত্রাসী, ত্রাস সৃষ্টিকারী, ভূমি দস্যূরা দীর্ঘদিন সরকারী জমিগুলোকে নিজেদের বিভিন্ন কাজে জোরপূর্বক ব্যবহার করে আসছিলো। এরফলে সরকার বিশাল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলো। এই অবস্থায় সম্প্রতি ওই জলমহালটি প্রকৃত মৎস্য চাষীদের কাছে লীজ দেওয়া হয়। জলমহাল লীজ ফরম, চালান ফরম ও ময়মনসিংহ সদর উপজেলা ভূমি অফিস কর্তৃক লীজকৃতদের জলমহালের দখল বুঝিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত আদেশপত্র সূত্রে দেখা যায়, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার কুষ্টিয়া ইউনিয়নের দড়িকুষ্টিয়া মৌজাভূক্ত বিল জলমহালের ৪.৮৪ একর জমি (যার আর,এস খতিয়ান নং-১. আরএস দাগ নং- ১০০৩) গত বছরের ৮ ডিসেম্বর স্থানীয় মৎস্য চাষীদের সংগঠন দড়িকুষ্টিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নিকট ৩ বছরের জন্য লীজ দেওয়া হয়। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী ওই জলমহাল সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির সকল শর্ত মোতাবেক দড়িকুষ্টিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ-এর পক্ষে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের নামে বাংলা ১৪২৭ সনের ১ বৈশাখ থেকে বাংলা ১৪২৯ সনের ৩০ চৈত্র, এই ৩ বছরে জন্য জলমহালটি লীজ দেওয়া হয়। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া আক্তার লাকী স্বাক্ষরিত সদর উপজেলা ভূমি অফিস কর্তৃক জারিকৃত এক আদেশপত্রে দড়িকুষ্টিয়া মৎস্যজীবী সমিতির পক্ষে লীজ গ্রহিতা আমিনুল ইসলামকে বিলের দখল বুঝিয়ে দেয়ার জন্য কুষ্টিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস বরাবর নির্দেশ দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দড়িকুষ্টিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লীজপ্রাপ্তির পর ওই সমিতির অর্ন্তভূক্ত সাধারন মৎস্য চাষীরা জলমহালটিতে বিভিন্ন জাতের দেশী মাছের চাষাবাদ শুরু করে। আর তখন থেকেই ইজারা বঞ্চিত চিহ্নিত ভূমিদস্যূ সন্ত্রাসীরা তাদের স্বরূপে দৃশ্যপটে হাজির হয়। তারা সমিতিভূক্ত সাধারণ মৎস্যচাষীদের মাছ চাষে জোর-জবরদস্তি বাধা প্রদান করতে থাকে। সন্ত্রাসীদের অব্যাহত বাধা ও হুমকি প্রদানের কারনে সমিতিভূক্ত সাধারণ মৎস্য চাষীদের মধ্যে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। তারা তাদের স্বাভাভিক চাষ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে বিভিন্ন ক্ষতির সম্মুখীন হতে থাকেন। এ অবস্থায় চলতি বছরের গত ২৩ ফেব্রুয়ারী ময়মনসিংহ সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া আক্তার লাকীর উপস্থিতিতে সাইনবোর্ড লাগিয়ে জলমহালটি সমিতির লোকজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার উদ্যেগ নেওয়া হয়। এই খবর শুনে সন্ত্রাসী পক্ষের লোকজন ঘটনার দিন দুপুরে ধারালো অস্ত্রসস্ত্রসহ উপস্থিত হয়ে জলমহাল বুঝিয়ে দেয়া ও সাইনবোর্ড টানিয়ে দেবার উদ্যেগে বাধা প্রদান করে। এ সময় তারা দড়িকুষ্টিয়া মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও তার ছেলে আশিকসহ সমিতির সাধারন মৎস্য চাষীদের উপর দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা করে। হামলায় গোলাম মোস্তফা ও তার ছেলে আহত হন। গুরুতর আহত আশিককে পরবর্তীতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার সময় আক্রান্তদের ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। হামলাকালে সন্ত্রাসীরা জলমহালটি হতে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার পরিমান মাছ মেরে ফেলে। হামলার সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া আক্তার লাকীসহ তার সাথে থাকা পুলিশ কর্মচারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারী কুষ্টিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস দড়িকুষ্টিয়া মৎস্য জীবি সমবায় সমিতিকে জল মহালটিকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য তাদের অফিস স্টাফসহ উপস্থিত হলে ওইদিনও অবৈধ দখলদার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বাধার সম্মুখীন হয়। ইউনিয়ন ভূমি অফিস কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ময়মনসিংহ সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর প্রেরিত এক পত্রে বিষয়টি উল্ল্যেখ করা হয়, যেখানে ওই বাধা প্রদানকে সরকারী স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে বলে উল্ল্যেখ করা হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারীর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দড়িকুষ্টিয়া মৎস্য জীবি সমবায় সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা কর্তৃক গত ২৭ ফেব্রুয়ারী ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা প্রচেষ্টা সহ বিভিন্ন ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১১২,তারিখ-২৭/০২/২০২১)। মামলার ধারাগুলো হলো- ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৪২৭/ ৫০৬ (২) ও ১১৪। মামলায় দড়িকুষ্টিয়ার বাসিন্দা- আতাউর রহমান, আঃ আহাদ, আমজত আলী, লৎফর রহমান, শফিকুল ইসলাম, আঃ ছালাম, মোস্তফা কামাল, কাউছার, শরিফুল, চাঁন মিয়া, গোলাম রব্বানীসহ আরও অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করা হয়েছে। এরমধ্যে আমজত আলী, লুৎফর রহমান, শফিকুল ইসলাম, আঃ ছালাম, মোস্তফা কামাল, কাউছার, শরীফুল প্রমূখরা সবাই সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী খালিদ বাবুর গানম্যান কামরুল ইসলামের নানাবাড়ীর ও তার পিতা মকবুল হোসেনের শ্বশুরবাড়ীর আত্মীয় পরিজন। উল্ল্যেখ্য, এই মামলার আসামীদের প্রায় সবাই ইতিমধ্যে উক্ত মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন। তবে সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী খালিদ বাবুর গানম্যান কামরুল ইসলামের মামা ও মকবুল হোসেনের শ্যালক আমজত এখনও পলাতক রয়েছে।
এছাড়া এই পরিস্থিতিতে জলমহালটি নিয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বরবার দড়িকুষ্টিয়া মৎস্য জীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারায় একটি নালিশী আর্জি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট বিষয়টি নিয়ে ময়মনসিংহ সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে আগামী ১ এপ্রিল ২০২১ ইং তারিখের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সময়ের মধ্যে আসামীপক্ষকে কারন দর্শাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া জলমহালটি নিয়ে যাতে আর কোনও শান্তি ভঙ্গের ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেন।
এসব বিষয়ে আলাপকালে দড়িকুষ্টিয়া মৎস্য জীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন যাবত প্রায় পতিত থাকা ওই জলমহালটি এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কূ দৃষ্টিতে পড়েছিলো। সম্প্রতি সমিতির উদ্যেগে লীজপ্রাপ্তির মাধ্যমে এলাকার সাধারণ মৎস্য জীবিদের ওই জলমহালে মাছ চাষের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী হয়। সরকারী বিধি বিধান অনুযায়ী ও সকল শর্ত মেনে তারা উক্ত জলমহালের লীজ পান বলে তিনি জানান। তিনি অভিযোগ করেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসী আতাউর, আঃ আহাদ ও তদীয় গংরা এলাকার ভূমি দস্যূ বিধায় উক্ত জলমহালটি দখল করে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিলো। কিন্তু সরকারীভাবে দড়িকুষ্টিয়া সমিতি লীজ পাওয়ায় তা তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না। যার কারনে সমিতির জলমহালে মাছ চাষে বাধাসহ সন্ত্রাসী হামলা তারই বহিপ্রকাশ। আমিনুল আরও অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসী দখলদার বাহিনীর পক্ষে সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী এ.কে.এম খালিদ বাবুর গানম্যান এসআই কামরুল ইসলাম ও তার পিতা মকবুল হোসনের (মকবুল পুলিশ) মদদেই সন্ত্রাসীরা এইসব ঘটনা ঘটানোর সাহস পেয়েছে। মকবুল পুলিশ ও কামরুল ইসলাম উভয়ের বাড়ীই এই এলাকায়। আর হামলা মামলার আসামীদের প্রথম দুইজন ছাড়া বাদবাকীরা সবাই মকবুল পুলিশের শ্বশুর বাড়ী ও কামরুল ইসলামের নানাবাড়ীর লোকজন। মকবুল পুলিশের পুত্র কামরুল সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রীর গানম্যান হওয়ায় সেই প্রভাব খাটিয়ে দখলদার সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।
কুষ্টিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি হাজী মোঃ জামালউদ্দিন খান বলেন, সন্ত্রাসী বাহিনীর পক্ষে সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী এ.কে.এম খালিদ বাবুর গানম্যান এসআই কামরুল ইসলাম ও তার পিতা মকবুল হোসনের (মকবুল পুলিশ) মদদেই এইসব ঘটনা ঘটছে। এছাড়া স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাসনুল ইসলাম হাসানের মদদে ভূমি দখলদার সন্ত্রাসীরা সাধারন মৎস্য জীবিদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকল সরকারী বিধি-বিধান ও নিয়মকানুন মেনে দড়িকুষ্টিয়া মৎস্য জীবি সমিতি জলমহালটির ইজারা পেয়েছে। কিন্তু এলাকার বিভিন্ন চিহ্নিত ব্যক্তিদের যোগসাজশে সন্ত্রাসীরা জলমহালটির দখল নিতে বাধা দিয়ে আসছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য ও মামলার আসামী আমজত আলী, মোস্তফা, শফিক, কালাম, সালাম ও লুৎফর প্রমূখরা এলাকার চিহ্নিত রাজাকার মৃত কুদ্দুস ক্বারীর সম্পর্কে নাতি ও ভাতিজা। এছাড়া এরা সবাই বিএনপি-জামায়তের রাজনীতির সাথে জড়িত। এরমধ্যে আমজাত আলী, আতাউর রহমান ও মোস্তফা ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনে দলটির কাউন্সিলার তালিকভূক্ত ছিলেন বলে তিনি জানান।
কুষ্টিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাবুল সরকার বলেন, সমিতি সকল সরকারী নিয়মকানুন ও বিধি বিধান মেনে জলমহালটির ইজারা পেয়েছে। সাধারন মৎস্যজীবিরা জলমহালটির ইজারা পাওয়ায় এলাকাবাসী খুশি হয়েছিলো। কারন এরফলে সরকারও দীর্ঘদিন পর রাজস্ব পাওয়ার সুযোগ পায় ও সাধারন মৎস্য জীবিদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু অতীত থেকেই এই এলাকার ভূমি ও খাল-বিল জবরদখল করে ব্যবহার করে আসা চিহ্নিত গোষ্ঠী এটি মানতে পারে নাই বলে তারা জলমহালটি দখলে বাধা দিচ্ছে বলে তিনি জানান। বাবুল সরকার বলেন, রাজাকার কুুদ্দুস ক্বারীর আত্মীয় স্বজন ও বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্তরাই এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে জড়িত। এ ছাড়া এলাকার প্রভাবশালী কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটিকে অন্তরালে থেকে ইন্ধন দিচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
একই অভিযোগ করেন দড়িকুষ্টিয়া সমবায় সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী বাহিনীটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ভূমি দস্যূতা, খালবিল দখল সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিলো। সমিতি জলমহালটির লীজ পাওয়ায় তা তাদের গাত্রদাহের কারন হয়ে উঠে। এ কারনেই তারা ২৩ ফেব্রুয়ারীর হামলায় তাকে ও তার ছেলেকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। মকবুল পুুলিশ এদের মদতদাতা বলে গোলাম মোস্তফা জানান। সন্ত্রাসী হামলা ও জলমহাল দখলে বাধাপ্রদানকারীদের সাথে জড়িতদের মদতদাতা হিসেবে তিনিও মকবুল পুলিশ ও তার ছেলে গানম্যান এসআই কামরুল ইসলামকে দায়ী করেন। মামলায় কেন তাদের আসামী করেন নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কামরুল ইসলাম সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রীর গানম্যান হওয়ায় সে ও তার পিতা এলাকায় মন্ত্রীর প্রভাবের নাম ভাঙ্গিয়ে এইসব সন্ত্রাসী কাজে মদদ দিয়ে আসছে। এই প্রভাবের কারনেই তারা ভয়ে পিতা ও পুত্রকে মামলার আসামী করেননি। এছাড়া তারা সরাসরি হামলায় জড়িত না হয়ে অন্তরালে কলকাঠি নাড়ানোর কারনেও তাদের সরাসরি আসামী করা যায়নি। মামলায় এজহারভূক্ত আসামীদের প্রথম দুইজন ছাড়া বাদবাকীরা প্রায় সবাই কামরুলের মামা ও মামাতো ভাই বলে মোস্তফা জানান।
বিষয়টি নিয়ে মকবুল পুলিশ ও তার ছেলে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর গানম্যান এসআই কামরুলের সাথে বারবার যোগাযোগ করেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া আসামীদের অনেকেই পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। আসামীদের নিকটাত্মীয়রাও এ নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে কিছু বলতে রাজি হননি।
ময়মনসিংহ সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া আক্তার লাকী জানান, উক্ত জলমহালটি সরকারী বিধি-বিধান ও বিজ্ঞপ্তির সকল নিয়মকানুন মেনে দড়িকুষ্টিয়া মৎস্য জীবি সমিতিকে লীজ দেওয়া হয়েছে। জলমহালটির দখল বুঝিয়ে দিতে গিয়ে তিনিও সন্ত্রাসীদের বাধার শিকার হন। সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে বিরূপ পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি ২৩ ফেব্রুয়ারীর হামলার সময় ঘটনাস্থলে শেষ অবধি উপস্থিত থাকতে পারেননি। এর আগে ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে নির্দেশ দিলে তারাও বাধার কারনে সমিতিকে দখল বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয় বলে তিনি জানান। জলমহালটির বিস্তারিত বিষয়ে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের দেওয়া সময়সীমার মধ্যে তিনি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বর্তমানে কাজ করছেন বলে তিনি জানান।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি