1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৮:১১ অপরাহ্ন

ধনী দেশে বাড়তি সঞ্চয় ৩ লাখ কোটি ডলার, আমানত বেড়েছে বাংলাদেশেও

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১
  • ৩৯১ বার দেখা হয়েছে

মহামারিতে গত এক বছরে সারা বিশ্বে অনেক মানুষের আয় কমেছে। অনেক মানুষ অরক্ষিত হয়ে পড়েছেন। এটা যেমন সত্য, তেমনি এটাও সত্য, উন্নত দেশে প্রণোদনার কারণে মধ্যবিত্তের একটি অংশের হাতে টাকা জমেছে। বাস্তবতা হচ্ছে, মহামারিজনিত অনিশ্চয়তা না কাটলে এই মানুষেরা আবার হাত খুলে ব্যয় করতেও আগ্রহী হবেন না। তাতে প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগবে না।

বিশ্বের ২১টি ধনী দেশের মানুষের সঞ্চয়ের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। তারা বলছে, এই মহামারি না এলে গত বছরের প্রথম ৯ মাসে এই দেশগুলোর মানুষ ৩ লাখ কোটি ডলার ব্যয় করত। কিন্তু বিধি বাম। ব্যয় তো এরা করেইনি, উল্টো ৬ লাখ কোটি ডলার সঞ্চয় করেছে। অর্থাৎ এরা অতিরিক্ত ৩ লাখ কোটি ডলার সঞ্চয় করেছে—এই দেশগুলোতে বার্ষিক ভোক্তা ব্যয়ের ১০ ভাগের এক ভাগ।

আবার কিছু কিছু দেশের পারিবারিক সঞ্চয় এর চেয়ে বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত সঞ্চয় শিগগিরই মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর পেছনে অবশ্য সদ্য পাস হওয়া ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজের আংশিক ভূমিকা আছে।

দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, আর্থিক মন্দার সময়েও পারিবারিক সঞ্চয় এত বৃদ্ধি পায় না। অনেকেই আয় হারিয়েছেন তা ঠিক, কিন্তু ধনী দেশগুলো মহামারির চূড়ান্ত সময়ে বেকার ভাতাসহ বিভিন্ন খাতে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় করেছে। এতে গত বছর পারিবারিক আয় উল্টো বেড়েছে। একই সঙ্গে আবার লকডাউনের কারণে মানুষের ব্যয়ের পথ বন্ধ হয়েছে। লকডাউন এখন উঠে গেছে। কিন্তু সেবা খাত পুরোপুরি চালু হয়নি। স্বাস্থ্যগত কারণে মানুষের চলাচল এখনো সীমিত। এসব কারণে বাস্তবে ধনী দেশগুলোতে মানুষের আয় বেড়েছে।

এখন কথা হচ্ছে, এই অতিরিক্ত নগদ অর্থ দিয়ে এই মানুষেরা কী করবে। এরা এক ধাক্কায় এই অর্থ ব্যয় করলে ২০২১ সালে ধনী দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ ছাড়াবে—দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরও প্রবৃদ্ধির এমন বাড়বাড়ন্ত হয়নি। আরেকটি সম্ভাবনা হলো প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়ার জন্য করদাতাদের কর বৃদ্ধি পাবে, এমন সম্ভাবনা থাকলে মানুষ ব্যয় বন্ধ করে দিতে পারে।

তবে বাস্তবতা ঠিক এ রকম নয়। মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগ্যান চেজের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ধনী দেশগুলোতে ভোক্তা ব্যয় শিগগিরই প্রাক-মহামারি পর্যায়ে চলে যাবে। তাতে এবার প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগবে। গোল্ডম্যান স্যাকসের ভবিষ্যদ্বাণী হলো, অর্থনীতি পুরোপুরি চালু হলে প্রবৃদ্ধির হার ২ শতাংশ বাড়বে।

এদিকে ধনী দেশগুলোর সংগঠন ওইসিডি ৯ মার্চ এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২১ সালে জি-২০-ভুক্ত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। টিকাদান চলছে। মানুষের আস্থা ফিরে এলে এই সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করবে—এই ধারণার ভিত্তিতে তারা প্রাক্কলন করেছে।

কিন্তু এই অতিরিক্ত সঞ্চয় মানুষ আয় হিসেবে বিবেচনা করবে, নাকি সম্পদ, তা নিয়ে ধন্দ আছে বলে মনে করছে দ্য ইকোনমিস্ট। দেখা গেছে, আয় বাড়লে পরিবারের ব্যয় বাড়ে। কিন্তু সম্পদের মূল্য বাড়লে, অর্থাৎ পৈতৃক বাড়ির মূল্য বাড়লে মানুষ সাধারণত ব্যয় বাড়ায় না। তবে কীভাবে এই সঞ্চয় হচ্ছে, ব্যয় শেষমেশ তার ওপর নির্ভর করে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে প্রণোদনা প্যাকেজের কারণে সঞ্চয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় যাঁরা সঞ্চয় বৃদ্ধি করেছেন, তাঁরা খরচ করতে খুব একটা দোনোমনা করবেন না বলেই বিশ্লেষকদের ধারণা।

দেশেও বাড়ছে ব্যাংক আমানতঃ
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ২০২০ সালের তুলনায় ব্যাংক আমানত বেড়েছে ১৩ দশমিক ০৩ শতাংশ। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো না হাওয়ার কারণে ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়ার আগ্রহ তো নেই, উল্টো ব্যাংকে টাকা রাখছেন অনেকে। অনেকে অনিশ্চয়তার কারণে টুকটাক খরচ করছেন না। এ সব কারণে করোনায় খরচও কমেছে অনেকের। সেই টাকা দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে না গিয়ে সঞ্চয়ী হিসাবে রেখে দিচ্ছেন। ফলে ব্যাংকে আমানত বাড়ছে। একই কারণে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ছে।

তবে সেবা খাত পুরোপুরি চালু না হলে অর্থনীতি স্বাভাবিক গতিধারায় ফিরবে না। সেটা আবার নির্ভর করছে সংক্রমণের ওপর। দেশে যেভাবে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে, তাতে সেবা খাত নতুন ধাক্কা খাবে, এমন আশঙ্কা প্রবল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সময় আবারও পিছিয়ে যেতে পারে, এমন আশঙ্কাও করছেন অনেকে। তাতে মানুষের সঞ্চয় আরও বাড়বে বলেই ধারণা করা যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি