1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১২:২১ অপরাহ্ন

মেহের আফরোজ শাওনের বাবা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী প্রতারনার ফাঁদে পড়ে বিবাহ

আবু তাহের বাপ্পা
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৬১ বার দেখা হয়েছে

আবু তাহের বাপ্পা : বিয়ের নামে সুন্দরী নারীদের প্রতারণার ফাঁদ। ম্যারেজ মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতারণার এ ব্যবসা জমজমাট। রাজধানীর সহ সারা দেশে রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। উক্ত প্রতারক চক্রের সদস্য হিসেবে রয়েছে মধ্যবয়সী সুন্দরী নারী। প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ইতোমধ্যে বহু পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অমানিশা অন্ধকার । অনেকে আবার ধরাশষী হয়ে মান সম্মানের ভয়ে মুখ না খুলে কোটি কোটি টাকা তুলে দিচ্ছে প্রতারক চক্রের হাতে।

সুন্দরী প্রতারক নারীদের রূপ লাবণ্যে মুগ্ধ হয়ে মধ্য বয়সী থেকে শুরু করে ৭৭ বছরের বৃদ্ধ ও ধরাশয়ী হয়ে এখন পাগলা গারদে ঠাঁই হয়েছে। অতি সম্প্রতি দেশের বহুল আলোচিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের শশুর অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের বাবা ৭৭ ঊর্ধ্ব প্রকৌশলী স্বনামধন্য ব্যবসায়ী সিটিজেন গ্রুপ অব কোম্পানীর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর জীবন প্রতারণার ফাঁদে পড়েছে। জাতীয় সংসদের সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বেগম তহুরা আলী এর স্বামী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী (৭৭)। বেগম তহুরা আলী ১৯৯৬ -২০০১ এর দ্বিতীয় দফা ২০০৯- ২০২৪ মেয়াদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ছিলেন।

ছাত্র জীবন থেকেই ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক ছিলেন। জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। ১৯৪৭ সালের জামালপুর সদর উপজেলার নরুদ্দি ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের ডা: আফসার উদ্দিন এর ৪র্থ পুত্র। বর্ন্যাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী। বর্তমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর সদর আসন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এমনকি তার মেয়ে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও সংরক্ষিত আসনের এমপি প্রার্থী ছিলেন। এক কথায় প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজনদের একজন। তার রাজনৈতিক ও পেশাগত জীবন অত্যন্ত বর্ন্যাঢ্য। তিনি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক(৬৬-৬৯) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও তিনি পেশাগত ও কর্মজীবনে একজন দেশ বরেন্দ্র ব্যক্তি।

প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীর কন্যা মাহিন আফরোজ শিঞ্জন এর একটি মামলার সূত্র ধরে আমাদের অনুসন্ধান ও আজকের প্রতিবেদন। মামলার সূত্র হতে থেকে জানা যায় যে তার পিতা:- জনৈকা মোসা: নিশি ইসলাম (২৯) পিতা মোঃ বদরউদ্দিন মাতা- মিসেস আনজিরা স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম পূর্ব গোড়ান (বাসানং-১৪৮,রোড নং-০৮) । উপজেলা ও থানা- খিলগাঁও, জেলা- ঢাকা ।এপি পদ্মা গার্ডেন বাড়ি নং-০৭ (নতুন), দাগ নং ৩৯১, রোড- ১৩, ডিএনসিসি স্বাধীনতা স্মরনী,জামতলা উত্তর বাড্ডা থানা- বাড্ডা, ঢাকা ও (২) আল মাহফুজ খান (২৪) পিতা মোহাম্মদ আল-আমিন খান, মাতা-মাহমুদা আক্তার,সাং ও বাসা নং-১৪৮,রোড নং-০৮,পূর্ব গোড়ান,থানা-খিলগাও,ঢাকা,এপি গার্ডন বাড়ী নং- ০৭,ঢাকা নং-৩৯১,রোড নং-১৩,ডি এনসিস,স্বাধীনতা স্বরনী রোড,জামতলা,উত্তর বাড্ডা ঢাকা ও তাদের কয়েকজন অজ্ঞাতনামা সহযোগীর বিরুদ্ধে ৫/৪/২০২৪ ইং তারিখে বাড্ডা থানায় ধারা ৪১৯/৪২০/৪০৬/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬/১০৯ দি পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় মামলা দায়ের করে।

উক্ত মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে তার বাবা একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। আসামীদ্বয় তার বাবার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে পরবর্তীতে বিগত জানুয়ারী ২০১৪ মাস হইতে তার বাবার সাথে সোর্স এর মাধ্যমে বিভিন্নভাবে প্রলুদ্ধ করে। ১ নং আসামি মোসা: নিশি ইসলাম (২৯) তার বাবার সাথে মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করে। অভিযোগে আরো বলা হয় যে আসামীদ্বয় পরস্পর স্বামী/স্ত্রী। পরপর যোগসাজসে  প্রলুব্ধ করে তার বাবাকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে যায় এবং ২১/২/২০১২ ইং তারিখে তাদের বর্তমান ঠিকানা পদ্মা গার্ডেন এর বাসায় নিয়ে গিয়ে প্রতারণামূলকভাবে জোরপূর্বক ভীতি আচরণের মাধ্যমে বিয়ে করতে বাধ্য করে এবং ২ নং আসামী ম্যারেজ রেজিস্ট্রার বই এর ন্যায় অন্য একটি বইতে জোরপূর্বক তার বাবা স্বাক্ষর নেয় এবং পরবর্তীতে তার বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আলীর বাসায় গিয়ে তাদের বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলে তাহারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়।

মামলায় তিনি আরো ও  উল্লেখ করেন যে তার বাবা ও তাদের পরিবারটি সমাজের অত্যন্ত সম্মানিত একটি পরিবার তাই তাহারা পারিবারিক মান-সম্মানের ভয়ে আইনী পদক্ষেপ না নিয়ে ১নং আসামীর বাসায় যায় এবং উক্ত ঠিকানায় গিয়ে জানতে পারে আসামীদ্বয় পরস্পর স্বামী ও স্ত্রী।আসামীদ্বয় স্বামী/স্ত্রী হওয়ার পরেও তাদের সহযোগীদের নিয়ে একটি প্রতারক সিন্ডিকেট তৈরি করে। সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণীর বয়স্ক মানুষকে টার্গেট করে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। আসামীগণ প্রতারণার মধ্যে অত্যন্ত বিলাসী জীবন যাপন করে থাকে। অথচ তাদের কোন বৈধ আয়ের উৎস নাই।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে আসামিদ্বয় ৫০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীকে বিবাহে বাধ্য করে। বিভিন্ন সময় তার বাবা আত্ম মানসম্মানের ভয়ে বিকাশের মাধ্যমে আসামীদের ১৪/৩/২০২৪ ও ৩০ /৩/২০২৪ বিকাশের মাধ্যমে ১,০০,০০০/= টাকা প্রেরণ করে। আসামীদ্বয় ও তাদের সহযোগীরা তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। তাহারা পরস্পর সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। তার বাবা একজন মানসিক রোগী। তার মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছে বলে ও মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগের সূত্র ধরেই আমাদের অনুসন্ধানী টিম আসামীদ্বয় বিভিন্ন ঠিকানায় গিয়ে প্রতারণার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়। খিলগাঁও এর বাসার আশেপাশের বাসিন্দাদের ভাষ্য তাহারা বলে বেড়াতেন ১ নং আসামী একজন সরকারী চাকরীজীবী। কিন্তু ঘটনা আসলে সত্য নয়। এটি একটি সঙ্ঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। এদের প্রতারণার খপ্পরে পড়ে সমাজের বহু পরিবার তছনছ হয়ে গিয়েছে। অনেকে আত্মসম্মানের ভয় মুখ খুলে না।

ম্যারেজ মিডিয়া ও কাজী সবাই উক্ত প্রতারক চক্রের সঘবদ্ধ সদস্য। তবে আমাদের অনুসন্ধানে এতে উঠে এসেছে প্রকৌশলী মোহম্মদ আলী ঢাকার ঐতিহ্যবাহী একটি পাঁচ তারকা মানের হোটেলের ৩ দিন অবকাশ  যাপন করেছে। একজন (৭৭) বছর বয়সী সমাজের এত উচ্চবিত্ত স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদ কেন ঐ চক্রের সদস্যদের সাথে প্রেমে জড়াবে। মামলার অভিযোগের সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য তিনি ১ নং আসামীর সাথে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন বিষয়টি রহস্যজনক। আসামীদ্বয় যে প্রতারক চক্র এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু তার কর্মকাণ্ড ঘুনে ধরা উচ্চবিত্ত সমাজের একটি প্রতিচ্ছবি।

উল্লেখ্য যে প্রকৌশলী মোহম্মদ আলীর মেয়ে মেহের আফরোজ শাওন দেশ বরেণ্য কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এর ২য় স্ত্রী। তার বিবাহ ও বহু ঘটনা বহুল। হুমায়ূন আহম্মেদ এর মেয়ের বান্ধবী ছিলেন মেহের আফরোজ শাওন। যে বিবাহ নিয়ে দেশ ব্যাপী ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় আজও বইয়ে বেড়াচ্ছে।

ঘটনার যাই থাকুক না কেন প্রতারক চক্র আমাদের সমাজের জন্য ভয়ংকর থাবা। এ চক্রকে নির্মূল করতে না পারলে ভবিষ্যতে এ জাতীয় বহু নামী-দামী ব্যক্তি ও পরিবারকে ভয়াবহ পরিনামের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

উল্লেখ্য যে এ ঘটনার পর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর ৩৭ নং ওয়ার্ডের ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন ও কাজী মাও:ওমর ফারুককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি