আধুনিক চিকিৎসাসেবায় আলট্রাসনোগ্রাফি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় মায়ের পেটের বাচ্চার বৃদ্ধি, অবস্থান এবং অস্বাভাবিকতা আছে কিনা সহজেই আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে বোঝা যায়। এ ছাড়া পেটের পরীক্ষা, অগ্ন্যাশয়, লিভার, পিত্তথলি, পিত্তনালি, কিডনি, মূত্রথলি, প্লিহার অবস্থান ও রোগ নির্ণয় করতে আলট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। এসব রোগের পরীক্ষা করাতে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী আসেন জাতীয় কিডনি হাসপাতালে।
কিডনি হাসপাতালে রয়েছে অত্যাধুনিক এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন। দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যেই এক্স-রে মেশিন ঘর বন্ধ করে চলে যান টেকনোলজিস্টরা। এখানে আলট্রাসনোগ্রাফি করার সৌভাগ্য তো খুব কম লোকেরই হয়।
ভুক্তভোগী সেলিনা আক্তার জানান,তিনি শারীরিক সমস্যা জনিত কারণে আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে কিডনি হাসপাতাল আসেন,কিন্তু তাকে পরীক্ষা করানোর ডেট দেয়া হয় ১ মাস পর।ভুক্তভোগী সেলিনা আক্তার দৈনিক জাতীয় অর্থনীতিকে জানান,”সরকারি স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা যদি এমন হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়। গরিব মানুষেরা কী করবে। বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না কেন”?
হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্যও বেড়ে গেছে। এতে সাধারণ রোগীদের বাইরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা করাতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে। এ ছাড়া দালালদের কারণে রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা, স্থানীয় বেসরকারি ক্লিনিক ও রোগনির্ণয়কেন্দ্রের (ডায়াগনস্টিক সেন্টার) মালিকেরা এই দালাল চক্র গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে এবং অনুসন্ধানে উঠে আসে হাসপাতালের উল্টো চিত্র। দেখা যায়,আল্ট্রাসনোগ্রাফির সিরিয়াল বন্ধ বলার পরেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী জানান,তিনি সকালে এসে ২১০ টাকার পরীক্ষার জন্য ৪০০ টাকা প্রদান করার পর তাকে পরীক্ষা করারনোর সুযোগ করে দিয়েছে আনসার কতিপয় দালাল।এই ব্যাপারে আল্ট্রাসনোগ্রাফির রুমে গিয়ে ডাক্তার এটেন্ডেন্স এর সাথে কথা বলতে গেলে তারা এড়িয়ে যান।এমনকি যারা সিরিয়াল দেয় তাদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা গণমাধ্যম কর্মীর সাথে খুবই খরাপ ব্যবহার করেন।
ভুক্তভোগী রোগীদের একটাই প্রশ্ন,বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা-নিরিক্ষার টাকা বেশি হওয়ার কারণে বেশির ভাগ গবীর,মধ্যবিত্ত আসেন সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করতে।এক মাস পর যে টেস্টের ডেট দেওয়া হয়,যাদের সামর্থ্য নেই,যারা সরকারি হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল তারা এক মাস বাঁচবে কিনা?এ মৃত্যুর দ্বায়ভার কার?
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামান্ত লাল জানিয়েছিলেন,”প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ স্বাস্থ্য খাতে জিরো টলারেন্স”।
তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।সেই সাথে সরকারি হাসপাতাল গুলোতেও যদি সুষ্ঠু নজর থাকে তাহলে হয়তো সরকারি হাসপাতাল মূখী রোগীদের দুর্ভোগ কমবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।