1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন

“সড়কে ওজন স্কেলের অজুহাতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি, স্কেল অপসারণের দাবী ব্যবসায়ীদের্ । সরকারের ক্ষতি বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা”

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ২৭০ বার দেখা হয়েছে

রাষ্ট্র ও সরকারের শত শত হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হোক। তাতে কি, ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত চান। তাই সমগোত্রীয় স্বার্থে ব্যবসায়ীরা জোট বাঁধে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি। মন্ত্রীর কাছে আবেদন নিবেদন করে ফল না পেয়ে এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম রুট ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী ও যদি দাবি না মানেন তাহলে লাগাতার ধর্মঘট। বন্দর অচলের হুমকি। ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, সড়কে বসানো ওজন স্কেল অপসারণ । ওজন স্কেল থাকলে নির্ধারিত ওজনের বাহিরে ট্রাক ব্যবহার করা যাবে না। জাতীয় স্বার্থের সরকারের এ সিদ্ধান্তের কারণে ব্যবসায়ীরা নিয়ম মানতে হচ্ছে। ফলে অবৈধভাবে বেশী ওজনের পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা এক ট্রাকে দু’ ট্রাকের পণ্য পরিবহন করতে চাচ্ছে। তাতে তাদের লাভ।দেশ ও জনগনের হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি।এটি অন্যায় আবদার, মগের মুল্লুক, আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা বলে সমাজ সচেতনরা মনে করেন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড ও দাউদকান্দি এলাকায় স্থাপিত ওজন স্কেল (এক্সেল লোড কন্ট্রোল) চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ক্ষতি। সড়কে চলাচলকারী পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের ওজন নিয়ন্ত্রণের নামে কার্যত চট্টগ্রামের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের বাইরের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। ফলে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য লাঠে ওঠার উপক্রম হয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের দবী।

এ দবীতে ওজন স্কেল অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। এখানকার সব ব্যবসায়ী সংগঠন এ দাবি আদায়ে একজোট হয়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে চট্টগ্রাম চেম্বারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে চিঠি দেবেন তারা। পরে চট্টগ্রাম বন্দরের সব ধরনের পণ্য পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়াসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।

যোগাযোগ মন্ত্রণালয় পণ্যবাহী গাড়িতে ওভারলোডিংয়ের কারণে মহাসড়ক বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এমন অজুহাতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই জায়গায় গাড়ির ওজন মাপার স্কেল (এক্সেল লোড কন্ট্রোল) স্থাপন করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেল বসানো কারণে পরিবহণ ব্যয় অন্যান্য জেলার চেয়ে চট্টগ্রামে বেশি। ফলে অন্য জেলার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এখানকার ব্যবসায়িরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না। আগে একটি গাড়িতে একবারে ১৮-৩০ টন পর্যন্ত পণ্য পরিবহণ করতে পারতেন তারা। এখন ১৩ টনের বেশি পণ্য পরিবহণ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই আগে যে পণ্য পরিবহণে একটি গাড়ি লাগত, এখন লাগছে দুটি। ফলে পরিবহণ ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এই ব্যয় সমন্বয় করতে গিয়ে পণ্যের দাম বাড়াতে হচ্ছে। আর পণ্যের দাম বাড়ার কারণে ক্রেতারা চট্টগ্রাম বিমুখ হচ্ছেন। অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। দেশের অর্থনীতিতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। দুই এক্সেল (৬ চাকা) বিশিষ্ট মোটরযানের মাধ্যমে মাত্র ১৩ টন ওজনের পণ্য পরিবহণ নির্দিষ্ট করে দেওয়ার ফলে শিল্পের কাঁচামাল, ভোগ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহণ ব্যয় কেজিপ্রতি ৩-৪ টাকা পর্যন্ত বাড়ছে।

ওজন স্কেল চালুর পর থেকেই চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের মতে, শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। এতে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহণ ভাড়া আগের চেয়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু দেশের অন্য কোথাও কোনো মহাসড়কে ওজন স্কেল বাসানো হয়নি। তাই সেখানকার ব্যবসায়ীদের বাড়তি পরিবহণ ব্যয় গুনতে হচ্ছে না। ঢাকার আমদানিকারক যারা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করেন তা ঢাকায় নিয়ে যান তারাও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদের দাবি, হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওজন স্কেল তুলে দেওয়া হোক, না হয় দেশের অন্যান্য মহাসড়কেও স্থাপন করা হোক এই ওজন স্কেল। তবেই পণ্য পরিবহণ ব্যয়ে সমতা আসবে।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশে ৩৫টি মহাসড়ক রয়েছে। কিন্তু ওজন স্কেল আছে শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। এতে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী এবং চট্টগ্রামের সঙ্গে যারা ব্যবসা করছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই আমরা ওজন স্কেল নিয়ে সোচ্চার হচ্ছি। এ স্কেলের কারণে চট্টগ্রামের বদনাম হচ্ছে। এ স্কেলের কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। অথচ দেশের মোংলা বন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দরসহ অনেক বন্দর রয়েছে। প্রতিটি বন্দর দিয়েই পণ্য আমদানি হয়। কিন্তু একমাত্র ভুক্তভোগী হলেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী এবং চট্টগ্রামের সঙ্গে যারা ব্যবসা করেন তারা।

একই কারণে বিপাকে পড়েছেন সরকারি খাদ্য পরিবহণে নিয়োজিত ঠিকাদাররাও। খাদ্য পরিবহণ ঠিকাদাররা চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে ১৮ থেকে ২০ টন খাদ্য পরিবহণ করতে পারলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পরিবহণ করতে পারেন ১৩ টনের কম। ফলে খাদ্য পরিবহণ ঠিকাদাররাও লোকসান গুনছেন।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন  বলেন, ওজন স্কেল চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ওজন স্কেলের কারণে দেশের অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ে ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আমরা ওজন স্কেল অপসারণ চাই। না হলে আন্দোলনে নামব।

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি