পর্ব-১
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনঃ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম ওরফে সম্রাট (দাপ্তরিক পরিচিতি নম্বর ৬০২২২৭)বর্তমানে আশুগঞ্জ নদীবন্দর সরাইল আখাউড়া স্থল বন্দর মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব রত আছেন।
সম্প্রতি তার বিষয়ে উঠে এসেছে নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ। সরজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায় প্রকল্প পরিচালক হয়েই নিজের ভাগ্য বদলে ফেলেছেন তিনি, হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়া যাকে বলে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় রাজধানীর ধানমন্ডির ৯/এ সড়কের ১২১ নম্বর বাড়ির ৫/বি নং ফ্ল্যাট এর মালিক তিনি। এবং তার যৌথ অর্থায়নে একই সড়কের ১০১ নম্বর বাড়িটি নির্মাণাধীন অবস্থায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ বাড়িতে রয়েছে তার ফ্ল্যাট। নিজের একটি টয়োটা ব্র্যান্ডের গাড়ি থাকলেও যা তার শশুর সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার বলে প্রচার করে থাকে প্রকৌশলী আব্দুর রহিম। সম্প্রতি নাকি কালো রঙের দৈত্যাকার জিপ গাড়ি কিনেছেন নিজ ব্যবহারের জন্য, যা নিশ্চিত করেছেন তার বাসভবনের আশেপাশের লোকজন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় পার্সেনটেজের টাকা পকেটে না ঢুকলে ঠিকাদারদের দফারফা এক করে দেন তিনি। ঠিকাদারদের বিভিন্ন পন্থায় জিম্মি করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। দেশে বিদেশে নামে বেনামে করেছেন শত শত কোটি টাকার অর্থ ও সম্পদ। এত প্রভাব খাটানোর পেছনের কারিগর নাকি তার শ্বশুরবাড়ির এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, যিনি একটি বেসরকারি চ্যানেলের সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। আব্দুর রহিমের বাসভবনে সেই সাংবাদিক আত্মীয় ব্যতীত আরেকজন সাংবাদিক বসবাস করেন যার প্রভাব খাটিয়ে তিনি ধরা কে সরা মনে করে না।দুনীতিকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য ২০২৪ সালের নবগঠিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ বলেছেন দুনীতি করলে কাউকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর বক্তাব্য মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রকৌশলী আবদুর রহিমের আয় বহির্ভূত অর্ধশত কোটি টাকার সম্পাদের যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দুদক ও ছানাবড়া।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ও এসব ব্যাপারে অবগত রয়েছে। সড়ক মন্ত্রনালয়ের অনেকেই বিষয়টি জানেন বলে জানা গেছে।
প্রকৌশলী আব্দুর রহিম সম্রাট সম্পর্কে তার এক নিকটস্থ ব্যক্তি জানায়, ” স্যারের সাথে বাজারে যাই প্রতি সপ্তাহে, স্যার মাছ মুরগি ও গরুর মাংস কিনেন ২০-২৫ হাজার টাকার, তাহলে মাসে চারটি সপ্তাহে নিশ্চয় প্রায় এক লক্ষ টাকার কাঁচা বাজারই করতে হয় তাকে।রহিমের বেতন মাসে কত? কাঁচা বাজারে তার ব্যয় তার নিজ আয়ের থেকেও অনেক বেশি।আর নামে বেনামে সহায় সম্পদ তো রয়েছেই। যার সচিত্র প্রমাণ রয়েছে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির কাছে।
সংবাদ প্রকাশের পূর্বে সত্যতা যাচাইয়ে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি পত্রিকার কর্তৃপক্ষ প্রকৌশলী আব্দুর রহিমের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি বিভিন্ন ছলচাতুরির আশ্রয় গ্রহণ করেন। তার বিরুদ্ধে উল্লেখিত তথ্যবলি সঠিক নয় বলে তিনি জোর দিয়ে বলেন। তবে জাতীয় অর্থনীতির অনুসন্ধানে সব তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
টানা চতুর্থ মেয়াদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সরকার প্রধান প্রথমেই ঘোষণা করেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের, যা পুনঃ পুনঃ ব্যক্ত করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিমের বহির্ভূত সম্পদ ও ব্যায়ের বিস্তর অনুসন্ধান চালাচ্ছে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি। সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের অনেক সৎকর্মকর্তারা বলছে মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন প্রকৌশলী রহিমের আরে বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করলে আরো থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।