1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন

কবরী নামের ইতিহাস….

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২১
  • ৩৬৫ বার দেখা হয়েছে

তাঁর সাফল্যের শুরুটা হয়েছিল ‘সুতরাং’ ছবি দিয়ে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকানোর প্রয়োজন পড়েনি। ‘ময়নামতি’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সারেং বৌ’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘সুজন সখী’র মতো ছবিগুলোয় দর্শকেরা অবাক বিস্ময়ে দেখেছেন বাংলাদেশের চিত্রজগতের অসামান্য এক তারকার তারকা হয়ে ওঠা। অভিনয়ে, প্রযোজনায়, পরিচালনায়—তাঁর সাত দশকের জীবনটা যেন আশ্চর্য সফলতার গল্প। তারপর সব ফেলে গতকাল শুক্রবার রাতে চলে যান না–ফেরার দেশে। তাঁকে স্মরণ করে আজ শনিবার আবার শুনি বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর আবিষ্কার–গল্প।

‘সুতরাং’ ছবির ‘জরিনা’ চরিত্রের জন্য একটি মেয়ে খুঁজছিলেন অভিনেতা সুভাষ দত্ত। এমন একটি মেয়ে, যিনি নায়িকা হবেন স্বয়ং সুভাষ দত্তেরই বিপরীতে। ছবির সংগীত পরিচালক সত্য সাহা কবরীর সন্ধান দিলেন সুভাষ দত্তকে। সত্য সাহা সে সময় সুভাষ দত্তকে বলেছিলেন, চট্টগ্রামে একটি মেয়ে আছে, নাম মীনা পাল। তাঁর উচ্চতাও বেশি না। মঞ্চে কাজ করে। সুভাষ দত্ত এরপরই সত্য সাহাকে নিয়ে বিমানে চট্টগ্রামে গেলেন। চট্টগ্রামের ডা. কামালের সঙ্গে কবরীর বাবার পরিচয় ছিল। ডা. কামালকে নিয়েই কবরীদের বাড়িতে গেলেন সুভাষ দত্ত।

সারাহ বেগম কবরী

সারাহ বেগম কবরী

সেদিন বাড়ি ছিলেন না কবরী। ওই সময় তিনি ছিলেন ময়মনসিংহে। সুভাষ দত্ত ও সত্য সাহা মন খারাপ করে ফিরে এলেন ঢাকায়। চট্টগ্রামে আসার পর কবরীর বাবা সত্য সাহাকে খবর দেন।

এবারে আর সুভাষ চট্টগ্রামে গেলেন না। কবরীর কিছু ছবি তুলে নিয়ে আসার জন্য ড. কামালকে তাঁদের বাড়িতে পাঠালেন। কথামতো কাজ হলো। এরপর আর কোনো খোঁজ নেই। কবরী ধরে নিয়েছিলেন হয়তো পছন্দ হয়নি। এর মধ্যেই ঢাকা থেকে সুভাষ দত্ত খবর পাঠালেন যে কবরীর তোলা ছবিগুলো দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। তাঁর হাসি নাকি সুভাষ কাছে অসম্ভব সুন্দর মনে হয়েছে। কবরীকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বলা হলো।

সারাহ বেগম কবরী
সারাহ বেগম কবরী

কিন্তু মা তো আর রাজি না। তখন কবরীর বয়স সম্ভবত ১৩ বা ১৪। এক স্মৃতিচারণে কবরী বলেন, ‘মা কান্নাকাটি করে বাবাকে বললেন, আমার দুধের শিশুকে আমি দেব না। আমারও মা-ভাই–বোনদের ছেড়ে ঢাকায় আসতে ভালো লাগছিল না। মায়ের কান্না দেখে আমিও কান্না শুরু করলাম। বাবা বুঝিয়ে বললেন, ওরা ডেকেছে। আগে মীনা যাক। যদি ভালো না লাগে, তাহলে চলে আসবে। এই বলে বাবা আমাকে নিয়ে বাড়ি থেকে রওনা হলেন।’

ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে রওনা হলেন কবরী। ঢাকায় এসে উঠলেন পুরান ঢাকার বিউটি বোর্ডিংয়ে। সেদিন সুভাষ দত্ত দাদার সামনে এসে দাঁড়ালেন কমলা রঙের একটা ফ্রক পরে। দাদা বললেন, ‘যাও তো শাড়ি পরে আসো।’ বলতেই চটপট করে শাড়ি পরে দাদার সামনে গেলেন তিনি। তারপর জানানো হলো ভয়েস টেস্ট করা হবে। স্টুডিওতে গেলেন। কথা শুনে দাদা বললেন, সবই ঠিক আছে, কিন্তু কথার মধ্যে তো চাটগাঁয়ের আঞ্চলিক টান আছে।

জুটি হিসেবে সবচেয়ে আলোচিত ছিল রাজ্জাক-কবরী।
জুটি হিসেবে সবচেয়ে আলোচিত ছিল রাজ্জাক-কবরী। 

সে সময়ের স্মৃতিচারণে কবরী বলেছিলেন, ‘দাদা আমাকে যেভাবে সংলাপ বলতে বললেন, আমি তাঁর চোখের দিকে তাকিয়ে সেভাবেই সংলাপ আওড়াতে থাকলাম। অবশেষে দাদা জানালেন, জরিনা চরিত্রের জন্য আমাকে তাঁর পছন্দ হয়েছে। তারপর শুরু হলো আমার নাম নিয়ে গবেষণা। দাদা সৈয়দ শামসুল হককে আমার একটা নাম ঠিক করে দেওয়ার জন্য বললেন। যে নামেরই প্রস্তাব আসে, দেখা যায় এই নামে কেউ না কেউ আছে। আবার কোনো কোনো নাম দাদার পছন্দ হয় না। একবার ঠিক হলো যে “করবী” দেওয়া হবে। কেউ আবার বলল না, “কবরী”।

দুটো নাম নিয়ে বেশ ভাবনাচিন্তা চলল। শেষতক “কবরী” নামটাই টিকে গেল। আর “মীনা পাল” থেকে আমি হয়ে হলাম “কবরী”।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি