1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন

কাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব ?

ইসলাম ডেস্ক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১
  • ৫৭৫ বার দেখা হয়েছে

মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ একটি আর্থিক ইবাদতের নাম কোরবানি, যা প্রতিটি সামর্থ্যবান নর-নারীর ওপর ওয়াজিব। বিশ্বের অন্য দেশের মতো আমাদের দেশেও মহান আল্লাহর এই মহান ইবাদত বেশ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়। কিন্তু কোরবানি সম্পর্কে আমাদের পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকার কারণে বিভিন্ন সময়ে এর সঙ্গে অনেক ভুল ধারণাকেও গুলিয়ে ফেলি। তার মধ্যে একটি হলো গৃহকর্তার নামেই কোরবানি দিতে হবে বা সংসারের পুরুষদের নামেই কোরবানি দিতে হবে। বাংলাদেশে অনেক পরিবার এমন আছে, যাদের ঘরের নারী/মেয়েদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে আছে, অথচ কোরবানি দেওয়া হয় গৃহকর্তা/পুরুষ লোকটির নামে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিবই হয়নি। আবার অনেক পরিবারে মা-বাবার নামে কোরবানি দেওয়া হলেও তাদের অবিবাহিত ছেলে-মেয়ের (যারা শিক্ষা/বিয়ের জন্য রাখা টাকা/সোনা দিয়ে সাহেবে নিসাব হয়ে গেছে) নামে কোরবানি দেওয়া হয় না। অথচ তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এর কারণ হলো, আমরা স্পষ্টভাবে জানি না, কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব, আর কার ওপর ওয়াজিব নয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন কারণে মানুষের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়।

কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব : এক বাক্যে বলতে গেলে, যার ওপর জাকাত ওয়াজিব, তার ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন ওই মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব, যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে।

নেসাব কী? : সোনার ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি সোনার মালিক হলেই তাকে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বলে গণ্য করা হবে, আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ বা এমন প্রয়োজনাতিরিক্ত জিনিস যার মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ বা বেশি হয়।

কারো কাছে যদি সোনা বা রুপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না থাকে; কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (আল মুহিতুল বুরহানি : ৮/৪৫৫)

যেমন—কারো কাছে কোরবানির দিনগুলোতে দুই ভরি সোনা ও পাঁচ শ টাকা আছে, যার কোনো একটিও পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নয়। কিন্তু দুই ভরি সোনার মূল্য ও পাঁচ শ টাকাকে একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের বেশি হয়ে যায়। তাই তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হবেন এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।

উল্লিখিত আলোচনা দ্বারা বোঝা যায়, আমাদের দেশে এমন অনেক নারী রয়েছেন, যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে আছে; কিন্তু তার পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া হয় না। আবার এমন অনেক পুরুষ আছেন, যার ওপর মূলত কোরবানি ওয়াজিব নয় (ওয়াজিব তার স্ত্রী/কন্যার ওপর)। কিন্তু তার পক্ষ থেকেই কোরবানি দেওয়া হচ্ছে। আছে এমন যুবকও, যার কাছে কোনো না কোনোভাবে নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে; কিন্তু সে জানেই না যে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। যেহেতু কোরবানি একটি ইবাদত, তাই ওই কোরবানি ওয়াজিব না হওয়া ব্যক্তিটি কোরবানি করার সওয়াব পেয়ে গেলেও, মূলত যার ওপর ওয়াজিব ছিল, তাকে অবশ্যই কোরবানি করতে হবে।

আর কটা প্রহর পার হলেই কোরবানির ঈদ। তাই এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার। যারা ধনাঢ্য, তারা চাইলেই পরিবারের সবার পক্ষ থেকে কোরবানি করতে পারেন। কিন্তু যারা মধ্যবিত্ত, তারা সব দিক চিন্তা করে ঠিক করতে হবে, এ বছর তাদের পরিবারে কার কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে। প্রয়োজনে স্থানীয় কোনো বিজ্ঞ আলেমের সঙ্গে পরামর্শ করে বিষয়টি ঠিক করতে পারি আমাদের আসলে কার কার পক্ষ থেকে কোরবানি করা ওয়াজিব।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি