1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২০ পূর্বাহ্ন

ভোট বর্জনকারীদের সকল অপতৎপরতা রুখে দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

মোঃ ইস্রাফিল
  • আপডেট : সোমবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১৭৫ বার দেখা হয়েছে

গত ১৫ ই নভেম্বর নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গতকাল ৭ জানুয়ারি ২০২৪ইং তারিখে সারাদেশে সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একযোগে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি ও সমামনা বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ভোট বর্জন ও ভোট প্রতিহত করার নানান কর্মসূচিকে উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট  প্রদান করেন। সকাল সাড়ে আটটায় সিটি কলেজ ভোটকেন্দ্রে ঢাকা-১০ আসনের নৌকার প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ ও ছোট বোন শেখ রেহেনাকে সাথে নিয়ে ভোট প্রদান করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সারাদেশে সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ৪০ শতাংশের উপরে ভোট পড়েছে বলে দাবি নির্বাচন কমিশনের।

গতকাল ৭ জানুয়ারি সকাল আটটা থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সারাদেশে বিকেল চারটা পর্যন্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৫-১১-২০২৩ইং তারিখে ৭ জানুয়ারি ২০২৪ইং তারিখ রবিবার ভোট গ্রহনের দিন ঠিক করে  তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।উক্ত নির্বাচনে ৩০০ আসনের বিপরীতে ২৯ টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সহ মোট ২৭১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।এতে মোট ভোটার ছিল ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে নির্বাচন কমিশন ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৯৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সারাদেশে ৯ লাখ ১০ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেন। এছাড়াও সারাদেশে ৪২ হাজার ২৪ টি ভোট কেন্দ্রে সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে ভোটদান ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ৪৪১৯২ জন বর্ডার গার্ড সদস্য  , ২০৫৫ জন কোস্টগার্ড সদস্য , ৬০০ টি রেপিড একশন ব্যাটেলিয়ান টিম, ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৭ জন পুলিশ  সদস্য ও ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮৮ জন আনসার ব্যাটেলিয়ান সদস্য  দায়িত্ব পালন করেন। মেট্রোপলিটন এলাকায় তিনজন অস্ত্রসহ পুলিশ সদস্য ও ১২ জন আনসার সদস্য এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে দুইজন অস্ত্রসহ পুলিশ সদস্য ও ১২ জন আনসার সদস্য প্রতি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর ৪০ হাজারের বেশি সদস্য সারাদেশে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনের সহয়তার লক্ষে ‘ইন এইড টু’ সিভিল পাওয়ার হিসেবে কাজ করেন। এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন সহ সহিংসতা এড়াতে প্রতিটি এলাকায় পর্যাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়ন করা হয়। নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, মোবাইল কোর্ট আইনের আওতায় প্রতিটি উপজেলা ও জেলা সদরের পৌরসভায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে এবং বাইরে ঢাকায় ২৬ জন, চট্টগ্রামে ১০ জন, খুলনায় ৬ জন, গাজীপুরে ৪ জন এবং অন্যান্য সিটিতে ৩ জন করে কাজ করেছেন। এর পাশাপাশি ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩০০ আসনে ৬৬৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচন উপলক্ষে সংগঠিত অপরাধসমূহ আমলে নেয়া ও তার সংক্ষিপ্ত বিচার সম্পন্ন করবেন।

এদিকে রাজধানী ঢাকার সিটি কলেজ কেন্দ্রে ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ, ছোট বোন শেখ রেহানা ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সহ সকাল সাড়ে আটটায় ভোট প্রদান করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।তিনি ভোটদান শেষে সাংবাদিকদের জানান,সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছে।দেশবাসী এ নির্বাচনকে সাদরে গ্রহণ করেছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে আরো বলেন, অবশ্যই আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ দেশি-বিদেশি সকল রকম অপুতৎপরতার বিরুদ্ধে গিয়ে  উন্নয়নের পক্ষে ভোট দানের মাধ্যমে উচিত জবাব দিবেন।  আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতু মন্ত্রী  ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভোট পরবর্তী ব্রিফিংয়ে দিনব্যাপী সাধারণ মানুষ  স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে উৎসবমুখর ভাবে ভোট দানের জন্য, ভোটার সহ দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান।  তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, যারা ভোট  বর্জন করেছে তাদেরকে সাধারণ মানুষও বর্জন করেছে।

এদিকে ঢাকা ১৪ আসনের নৌকার প্রার্থী আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিল সকাল সোয়ানটায় মিরপুর নগরের বশির উদ্দিন আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোটদান করেন। ভোটদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,  নৌকা এদেশের স্বাধীনতার প্রতীক, নৌকা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতীক, নৌকা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আদর্শের প্রতীক, নৌকা উন্নয়নের প্রতীক এবং নৌকা আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রতীক। তাই, এদেশের মানুষ নৌকা ব্যতীত অন্য কোন মার্কায় ভোট দিবেন না। ঢাকা-১৬ আসনের নৌকার প্রার্থী আলহাজ্ব ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা বলেন, মানুষ উন্নয়ন চায়, মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে চায়, মানুষ আগামী প্রজন্মকে উন্নততর জীবনের নিশ্চয়তা দিতে চায়। তাই, নৌকা উন্নয়নের প্রতীক ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রতীক হিসেবে নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। তিনি তার বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলেও সাংবাদিকদের জানান।

এদিকে সারাদেশে  সুষ্ঠু ভাবে ভোটগ্রহণ চললেও ৩০-৩৫ জায়গায় স্থানে বিছিন্ন কিছু সহিংসতা  ঘটেছে।এতে মুন্সীগঞ্জে একজন নিহত ও সাংবাদিক-পুলিশ সহ প্রায় শতাধিক লোক আহত হয়েছে।জাল ভোট, নানা অনিয়ম ও সহিংসতার দায়ে বেশ কিছু দুষ্কৃতিকারীদেরকে ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন ও বেশ কয়েকজন প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদেরকে পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগে প্রত্যাহার করে নেয় নির্বাচন কমিশন। কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের নৌকার প্রার্থী মুস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করেন নির্বাচন কমিশন। এদিকে বেশ কিছু আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে এনে ভোটগ্রহণ শেষের আগ মুহূর্তে নির্বাচন বর্জন করেন।এদিকে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর  পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনের ভুয়সী প্রশংসা  করেন। বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকগন বলেন,  আরো কিছু বিষয়ে নজর দিলে নির্বাচন আরো উৎসব মুখর হতে বলে জানান।

এছাড়া সাধারণ মানুষের সাথে নির্বাচন ও ভোট দান নিয়ে আলাপকালে তারা জানান, আমরা কোন সহিংসতা-জ্বালাও-পোড়াও  চাই না, আমরা উন্নয়ন চাই, আমরা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চাই, আমরা সুশাসন চাই, তাই আমরা এই আনন্দঘন পরিবেশে ভোট দিতে এসেছি। যে বা যারা এই ভোটে পাশ করবেন, তারা আমাদের এই দাবিগুলো বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।  নতুন ও ইয়াং ভোটারের একটা বড় অংশ দাবি করে বলেন, আমরা তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে চাই, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। তাই, আমরা ভোট দিতে এসেছি। ভোট শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ভোট সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি তার বক্তব্যে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দুইজন নির্বাচন সংশ্লিষ্টের হৃদযন্ত্রে ক্রিয়া হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। এছাড়া তিনি দাবি করে বলেন, কিছু রাজনৈতিক সংগঠনের ভোট বর্জন ও ভোট কেন্দ্রে  না আসার জন্য সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতি প্রায় ৪১% শতাংশ হয়েছে অন্যথায়, ৬০ শতাংশের বেশি ভোটার উপস্থিতি হতো বলে মনে করেন। এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৯৯ টি আসনের মধ্যে ২৯৮ টি আসনের বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করেছে ২২৪টিতে, জাতীয় পার্টি বিজয় লাভ করেছে ১১ টি আসনে,কল্যাণ পার্টি বিজয় পেয়েছে ১টি আসনে  এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীগন বিজয় পেয়েছে ৬২ টি আসনে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি