1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন

রাবি গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে চিরনিদ্রায় হাসান আজিজুল হক

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২১
  • ১৩২ বার দেখা হয়েছে

সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধায় অন্তিম বিদায় জানানো হলো নক্ষত্রতুল্য কিংবদন্তীকে। মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শায়িত হলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক।

সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় হাউসিং সোসাইটির (বিহাস) বাসভবন উজান-এ তিনি পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যান। তিনি দীর্ঘদিন থেকে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসান আজিজুল হককে তার কর্মস্থল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে শ্রদ্ধা জানানো শেষে দুপুর ১২টায় তার মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়।

শহীদ মিনারে আগে থেকেই পুষ্পস্তবক নিয়ে লম্বা সারি দিয়ে অপেক্ষা করছিলেন অগণিত মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শুরু হয় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে।

ঘণ্টাব্যাপী চলে শ্রদ্ধা নিবেদনের পালা। সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, শিল্পী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ ও বহু সাধারণ মানুষ এসেছিলেন মুক্তমনের বহু গুণের অধিকারী এই মানুষটিকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাতে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, রাজশাহী-৩ (পবা ও মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার প্রমুখ।

শহীদ মিনারে ভক্তদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে কিংবদন্তী এই কথাসাহিত্যিককে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে সমাহিত করা হয়।

হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালে ভারতের বর্ধমান জেলার যব গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৮ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতক এবং ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি পাস করেন। এর পর তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ২০০৪ সালে প্রফেসর হিসেবে অবসরগ্রহণ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার আগে ১৯৬০ সাল থেকে তিনি কয়েকটি কলেজে শিক্ষকতা করতেন। তিনি ২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ হিসেবে যোগদান করেন।

হাসান আজিজুল হক তার অসাধারণ সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। তিনি ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৯ সালে একুশে পদক ও ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। এর পাশাপাশি তিনি লেখক শিবির পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার-সম্মাননা অর্জন করেন।

সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ২০১৮ সালে ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধি লাভ করেন। ২০১২ সালে ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০১৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সন্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রিতে ভূষিত হন।

তার রচিত জনপ্রিয় গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য, আত্মজা ও একটি করবী গাছ, জীবন ঘষে আগুন, নামহীন গোত্রহীন, পাতালে হাসপাতালে, আমরা অপেক্ষা করছি, রোদে যাবো, রাঢ়বঙ্গের গল্প ইত্যাদি। আগুনপাখি ও শামুক যথাক্রমে তার রচিত প্রথম ও শেষ উপন্যাস। তার লেখা গল্পসমূহ হিন্দি, উর্দু, রাশিয়ান ও জাপানিজ ইত্যাদি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

তিনি মৃত্যুর সময় তিন মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। তার সহধর্মিণী শামসুন নাহার ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি