1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৮ অপরাহ্ন

আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না : প্রধানমন্ত্রী

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৮৬ বার দেখা হয়েছে

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত নিয়ে যারা জোট করেছে। তারা বলছে, আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না। আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে কাজ করে। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতা এসেছে, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছে।
আজ রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে জেলা ওমহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমি জানি, বিরোধী দল অনেক কথাই বলে। তারা আমাদেরকে আবার নোটিশ দেয়। আবার বলে— আমরা নাকি পালানোর পথ পাবো না। আমি এই বিএনপি-জামায়াত জোট যারা হয়েছে, তাদের জিজ্ঞেস করি— পালায় কে? আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না। পিছু হটে না।’
তিনি বলেন, ‘এমনকি আমি, ওই জিয়াউর রহমান বাধা দিয়েছিল— আমাকে দেশে আসতে দেবে না। আমি বাধা অতিক্রম করেই দেশে ফিরেছিলাম।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবার ২০০৭ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে, তখনও আমি বিদেশে গিয়েছিলাম, আমার ছেলের বউ অসুস্থ ছিল। তার বাচ্চা হয়েছিল, অপারেশন হয়েছিল, তাকে দেখতে। আমাকে দেশে ফিরতে দেবে না। আমি জোর করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মার্ডার কেস দেওয়া হয়েছিল। আমি বলেছি, আমি যাবো। এই কেস আমি মোকাবিলা করবো। আমি দেশে ফিরে এসেছি। শুধুমাত্র বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে যারা বলে পালানোর সুযোগ পাবে না আওয়ামী লীগ, আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আওয়ামী লীগ পালায় না। পালায় আপনাদের নেতারাই।’
বিএনপি নেতৃত্বের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি নেতারা কে? বিএনপি নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কাকে নিয়ে? দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত তাদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে। যে নাকি ২০০৭-এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে স্ট্যাম্প কাগজে মুচলেকা দিয়েছিল, আর কোনও দিন রাজনীতি করবে না বলে দেশ থেকে ভেগে গিয়েছিল, পালিয়ে গিয়েছিল, সে কথা কি বিএনপি নেতাদের মনে নাই?’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা, তারেক, এমনকি খালেদা জিয়া, তারেক ও কোকোর মাধ্যমে যে টাকা পাচার করেছিল মানিলন্ডারিং করে। ৪০ কোটি টাকা আমরা বাংলাদেশে নিয়ে এসেছি, তাদের পাচার করা টাকা। এর জবাব কি তারেক দিতে পারবে? আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না। আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে কাজ করে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এই সংগঠন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখনই ক্ষমতায় এসেছে, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে।’
বিএনপি-জামাত জোটের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি নেতারাই দুর্নীতি করে পালিয়ে যায়। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক জিয়া আর কখনও রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কোকোর মাধ্যমে যে টাকা তারা পাচার করেছিল, তার ৪০ কোটি টাকা সরকার পরে ফেরত নিয়ে এসেছে। তারা এক হাজার ৮০০ বাস, ৩৩টি সরকারি অফিস, লঞ্চসহ অসংখ্য মানুষকে আন্দোলনের নামে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাধারণ মানুষসহ পুলিশকেও তারা নির্মমভাবে পিটিয়েছে। তারেক রহমান এতটা লুটপাট করেছে যে বিদেশের মাটিতেও আয়েশি জীবনযাপন করছে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা করে যেতে পারেননি। কারণ তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। আমি ও আমার বোন দেশের বাইরে ছয় বছর রিফিউজি (শরণার্থী) হিসেবে থেকেছি। এরপর তারেক জিয়ার বাধা-বিপত্তি মোকাবিলা করে দেশে ফিরে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ শুরু করি।’
তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ শুরু করে। রাজশাহী এক সময় উপেক্ষিত ছিল। রাজশাহীর মানুষের জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর তৈরি করা রাজশাহীর রেশম-চিনি-পাট শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ৭৫ পরবর্তী সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। সেগুলোকে পুনর্গঠনে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ বিএনপি বলে, আওয়ামী লীগ পালাবার জায়গা পাবে না। পালায় কে? আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না। জিয়াউর রহমান আমাকে দেশে আসার জন্য বাধা দিয়েছিল। আমি জোর করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। দেশে ফিরে এসেছি বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে। জনগণের ভাগ্য বদলের জন্য। আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না; সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সালে তাদের অস্ত্রের মহড়া জনগণ দেখেছে। এ কারণে দেশে ইমার্জেন্সি ডিক্লারেশন হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা দেয় তা, বাস্তবায়ন করে।’ এ সময় বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। শেষে হাত উঁচিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে ওয়াদা করান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণে রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সাধারণ মানুষকে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। কিন্তু নৌকায় ভোট না দিলে দেশ স্বাধীন হতো না, দেশ স্বাধীন না হলে জিয়াউর রহমান মেজর জেনারেল হতো না, দেশ স্বাধীন না হলে খালেদা জিয়া ক্ষমতায়ও আসতে পারতো না।
সরকারপ্রধান বলেন, দেশের কোনো মানুষ গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না। যারা বাকি আছে তাদেরও পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে। এই বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কেউ গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৪ বছরে রাজশাহী জেলা ও মহানগরে ১০ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। শুধুমাত্র রাজশাহী নগরীতেই ৪ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। আজকে ১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ২৬টি প্রকল্প উদ্বোধন করলাম। ৩৭৫ কোটি টাকার ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করলাম। এই প্রকল্পগুলো আপনাদের জন্য উপহার হিসেবে দিয়ে গেলাম।
রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল। জনসভায় বক্তব্য রাখেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, রেল মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, বেগম আখতার জাহান প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি