1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন

করোনা প্রতিরোধে বাসাবাড়িতে ‌‘মুক্তবাতাস’ ব্যবস্থার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১
  • ৬৩৮ বার দেখা হয়েছে

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায়সহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়াও বাসাবাড়িতে মুক্তবাতাসের ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, আমাদের ‘থ্রি সি’ অর্থাৎ ক্রাউড, ক্লোজ কন্টাক্ট ও ক্লোজ কনভার্সেশন এড়িয়ে চলতে হবে।

রোববার (২৫ এপ্রিল) স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরাম আয়োজিত ‘করোনা ভাইরাসের বিস্তার ও প্রতিরোধ নিয়ে বিভ্রান্তি ও আশু করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এসব মতামত দেন।

বক্তারা বলেন, বদ্ধ জায়গা যেমন বাড়িঘর, শপিংমলসহ সর্বত্র দরজা-জানালা খুলে বাতাস চলাচলের স্বাভাবিক ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সাধারণ মানুষকে সচেতন ও প্রস্তুত হতে সাধারণ মানুষকে সময় দিতে হবে।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দারের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক মৃনাল কান্তি মৃধা ও যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ক্লিনিক্যাল প্রাক্টিশনার ডা. সালমা হাসান।

নভেল করোনাভাইরাস বা সার্স-কোভ-২ মূলত বাতাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হয় বলে একদল গবেষকের একটি প্রবন্ধ মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশ করেছে। সেখানে ১০টি কারণ তুলে ধরা হয়েছে। কারণগুলো সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করে মৃনাল কান্তি বলেন, বাতাসের মাধ্যমে করোনা ছড়ায় প্রকাশিত প্রবন্ধে গবেষক দল যে ১০ কারণের কথা উল্লেখ করেছেন তা অনুমান নির্ভর। এটাকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ করতে হবে।

তিনি বলেন, উনারা হাইপোথিসিসের পক্ষে কিছু প্রমাণ তুলে ধরেছেন, এটা প্রমাণ করেননি। দ্বিতীয়ত, তারা কিন্তু এ কথা বলেননি অন্যান্য যে মাধ্যমগুলো আছে সেগুলো থেকে করোনা ছড়ায় না। কিন্তু তারা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন বাতাসের মাধ্যমে ছড়ানোটা প্রধান উপায় হতে পারে।

সংস্পর্শ, ড্রপলেট ছাড়াও বাতাসের মাধ্যমেও করোনা ছড়ায় বলে মনে করেন গবেষকরা। এ প্রসঙ্গে ডা. সালমা বলেন, এখন আমাদেরকে নতুন করে আরও সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। আগের মতো সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, সার্জিক্যাল মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। জার্নাল ল্যানসেটে যে প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, বাতাসে করোনা ছড়ায় তা নিয়ে আমাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে। নতুন করে আরও সতর্ক হতে হবে।

করোনা পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে গত বছর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বলা হয়েছিল, অবশ্যই বাসা থেকে বাইরে যাবেন, খোলা বাতাসে গিয়ে নিঃশ্বাস নেবেন ও দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলবেন।

যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় ওয়েব শেষ হয়েছে এরপর কোনো কনসার্ট হয়নি, সিনেমা হল চালু হয়নি, জনসমাগম ঘটে এমন কোনো স্থান খুলে দেওয়া হয়নি। বাসা থেকে মানুষ কাজ করছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সব ধরনের বিধিনিষেধ এখনো রয়েছে। কিন্তু এবার বলা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবশ্যই বাসার বাইরে যাবেন, বাসার দরজা-জানালা খুলে রাখবেন। ঘরের বদ্ধ জায়গায় যদি ভাইরাসের ঝুঁকি থাকে দরজা-জানালা খুলে দেওয়ার ফলে বাতাসের সঙ্গে তা বেরিয়ে যেতে পারে। তার মানে নতুন করে আরও সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, ল্যানসেটের প্রবন্ধ প্রকাশ হওয়ার পর এখন কিন্তু নতুন করে ভাবনার সময় চলে এসেছে। জাপানের প্রসঙ্গ টেনে মৃনাল কান্তি বলেন, জাপানে থ্রি সি মেনে চলতে বলছে। ক্রাউড, ক্লোজ কন্টাক্ট ও ক্লোজ কনভার্সেশন-এই তিনটি এড়িয়ে চলতে বলা হচ্ছে। এগুলোর সঙ্গে আমরা হাত ধোয়া থেকে শুরু স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী যা যা করতাম তা করব।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেখতে হবে একটি বদ্ধ ঘরে ভাইরাসের ঘনত্ব কতটুকু। আর একজন মানুষ কতটুকু সময় একটা বদ্ধ জায়গায় কাটালে করোনা আক্রান্তের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। কীভাবে আমরা বাতাসে ভাইরাসের ঘনত্ব কমাতে পারি? একটা উপায় হচ্ছে বদ্ধ ঘরে বাতাসের চলাচল বাড়িয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশের জন্য ভালো উপায় হলো বদ্ধ ঘরের দরজা জানালা খুলে দেওয়া, শপিংমল যদি খুলতেই হয় সেক্ষেত্রে বদ্ধ জায়গায় মানুষের গতিবিধি ও সময় নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। সবার জন্য মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব একটা সার্জিক্যাল মাস্ক, তার ওপরে একটা কাপড়ের তৈরি মাস্ক ব্যবহার করেন। এতে নিজে অন্যদের দ্বারা আক্রান্ত অথবা সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা কমে যাবে।

যুক্তরাজ্যে হেল্থ জার্নালিজমের সঙ্গে যুক্ত ডা. সালমা বলেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির পরে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে হেল্থ জার্নালিজমটা ঠিক মতো হচ্ছে না। মিস কমিউনিকেশনের কারণে মানুষের মধ্যে ভুল তথ্য যাচ্ছে, গুজব ছড়িয়ে পড়ছে, সেগুলো খুব সহজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে।

সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য দিতে চাইলে, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সাংবাদিকতা করতে হলে হেল্থ এডুকেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে। সাধারণ মানুষের কাছে কঠিন বিষয়ে সঠিক তথ্য সহজভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াটা আমাদের দায়িত্ব। যুক্তরাজ্যে যারা হেল্থ বিষয়ে সাংবাদিকতা করছেন তাদের সবাই হেল্থ ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা।

ডা. মৃনাল বলেন, বাংলাদেশ সরকার বেশ কিছু প্রশংনীয় কাজ করছে। তারপরও বলব, আমাদের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আপনারা জানেন, ভারতে অক্সিজেনের কারণে সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অতিরিক্ত চাপ পড়েছে। সেখানে মানুষ মারা যাচ্ছে। এই অবস্থা বাংলাদেশে হোক তা চাই না। টিকার ব্যাপারে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা আরও জোরদার করতে হবে। যেন সবার কাছে টিকা নিয়ে যাওয়া যায়।

ডা. সালমা বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে যখন যে পদক্ষেপ নেওয়া হয় তার জন্য মানুষকে প্রস্তুত ও সচেতন করতে হবে। কোন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা সরকারিভাবে সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে।

তিনি বলেন, ভারতের কয়েকটি যে ভ্যারিয়েন্ট যুক্তরাজ্যেও ধরা পড়েছে। সে কারণে এখন থেকে ভারত থেকে যারাই আসবেন তাদেরকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। তাদের টেস্ট করতে হবে। ভারত প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের জন্য এটা ক্রিটিক্যাল সময়। এই অবস্থায় বাংলাদেশকে সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি